Home বিবিধ, প্রবন্ধ খোলা চিঠি – আমার পরিবার ৪
বিবিধপ্রবন্ধ

খোলা চিঠি – আমার পরিবার ৪

অঞ্জন বসু চৌধুরী

লেখা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কিছু চিঠির সংকলন যা আমার কাকু অঞ্জন বসু চৌধুরী এই ব্লগ খোলার সময় আমায় উৎসাহ জানিয়ে লিখেছিলেন এই লেখায় বর্ণিত চরিত্রগুলি সবাই আমার প্রিয়জন ঘটনাগুলি এক একটা নস্টালজিয়া তাই ওনার অনুমতি নিয়ে লেখাগুলো অপরিবর্তিত রেখে আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম    ~   সুদেষ্ণা মিত্র

 
চিঠি – ৪

 

আজকাল বিজয়া দশমী ও ভাইফোঁটা উৎসবগুলো কলকাতায় ঠিকঠাক হয় না। যদিও এখনকার (কলকাতা) ব্যবস্থা একটু হাই-ফাই। নিউক্লিয়ার পরিবারে একটা ভাই কি একটা বোন, সুতরাং তাদের জন্য ঢালাও আয়োজন। দামী দামী হরেক রকম মিষ্টি, মনজিনিস বা মিও-আমোরের কেকের উপকরণ থাকে পাতে। কিন্তু আগেকার সময়ে সবার সাথে ভাগ করে নেওয়ার আনন্দটা একেবারে আলাদা ছিলো। ছিলো না দামী জিনিস, আড়ম্বর, ছিলো শুধু অনুষ্ঠান উপভোগ করবার আনন্দ।

তমলুকের বাড়ির কথাই ধরা যাক। আমাদের বাড়িতে ৫ ভাই, ১ বোন, মাসির মেয়ে থাকলে আর একটা বোন বেড়ে যেতো। বড়দির (সুধাদি) বাড়িতে ৫ বোন ও ২ ভাই, সেজদির ১ ছেলে, ভুটান। আমাদের সকলে প্রায় এক সঙ্গেই বিজয়ার প্রণাম করা বা ভাইফোঁটা নেওয়া চলতো। বিজয়ার দিনে নিয়ম ছিলো, প্রথমে মন্দিরে গিয়ে মা বর্গভীমাকে (একান্ন পীঠের এক পীঠ) প্রণাম করে তারপর রামকৃষ্ণ মিশনে প্রণাম করা। এর পরে ওই দিনই সব বড়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রণাম করে তাদের আশিস নেওয়া। এটা আমাদের অবশ্য কর্তব্য ছিলো। কেউ কোনোও রকমের অজুহাত দিতে পারবে না। রাত্রে প্রত্যেকের বাড়িতে মিল অফ্‌। কেননা, এক এক বাড়িতে এমন খাওয়া হতো যে পেটে আর জায়গা থাকতো না। বড়রা সকলে আমাদের জন্যে অপেক্ষা করতেন। কেউ না গেলে তার খোঁজ খবর নিতেন, সে ঠিক আছে কি না।

খাবার হতো একদম বাঙালী মতে, যেমন লুচি, তরকারি, ঘুগনি, মোচার চপ (অবশ্যই বাড়িতে তৈরি করা), সিঙ্গারা আর প্রচুর মিষ্টি। এখনকার মতো, মোগলাই খাবার, মোমো বা বিরিয়ানী নয় কিন্তু।

সে এক অপূর্ব মেলবন্ধন। নিয়ামানুবর্তিতা আমরা মেনে চলতাম, যেমন কোনোও বাড়িতে গিয়ে দেখলাম বাবা বা বাবা-স্থানীয় কেউ গেছেন বিজয়ার প্রণাম করতে, আমরা দূরে অপেক্ষা করতাম। তাঁরা বেরিয়ে গেলে আমাদের ডাক পড়তো।

বড়দির বাড়িতে ভাইফোঁটা নিতে গেছি। আমরা ৫ ভাই, ওদিকে বড়দির ২ ছেলে, প্রসাদ আর রঘু আর সেজদির ছেলে ভুটান। বড়দি আমাদের ফোঁটা দিতো আর বড়দির মায়েরা ২ ভাইকে ফোঁটা দিতো, কিন্তু রঘুর টার্ন আসতো অনেক পরে। সে যেতো ক্ষেপে। তাকে যতোই বোঝানো হতো, সে বলতো আগে আমাকে দিয়ে দাও। আমরা খুব হাসতাম। সে সব দিনগুলোই অনাবিল আনন্দের আর অন্যরকমের ছিলো।

আজ এই পর্যন্তই।

লেখক পরিচিতি

 

অঞ্জন বসু চৌধুরী

কর্মাসে স্মাতক এম বি পাস করে চাকুরি জীবনে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও গান এবং গল্পের বই পড়া অঞ্জন বসু চৌধুরীর ন্যতম নেশা। এক সময়ে অসম্ভব সুন্দর মাউথ র্গ্যাবাজাতেন।

Author

Du-কলম

Join the Conversation

  1. Tomluker barir elahi khaoadaoar kotha amar mone ache.sajomashir hater ranna ,mochar chop, katlet , aha opurbo chilo.amito amar chele meyeke boli tora koto kichu miss korechish.

  2. Ekdom thik maima. Se sab dingulo satyi khub sundor ar anander chhilo.satyi ora khub miss korchhe. Ki

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!