অঞ্জন বসু চৌধুরী
এ লেখা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কিছু চিঠির সংকলন। যা আমার কাকু অঞ্জন বসু চৌধুরী এই ব্লগ খোলার সময় আমায় উৎসাহ জানিয়ে লিখেছিলেন। এই লেখায় বর্ণিত চরিত্রগুলি সবাই আমার প্রিয়জন। ঘটনাগুলি এক একটা নস্টালজিয়া। তাই ওনার অনুমতি নিয়ে লেখাগুলো অপরিবর্তিত রেখে আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। ~ সুদেষ্ণা মিত্র
চিঠি – ৩
তমলুকের বাড়িতে সেজদি আর ন’দির কথা না বললেই নয়। ন’দি খুব সুশীলা, মিষ্টি ও শিল্পীস্বভাবের ছিলো। খুব ভালো রবীন্দ্রসংগীত, আধুনিক, নজরুলগীতি গাইতো। আর সেজদির গুণ ছিলো নানান অসুবিধে সত্ত্বেও সব সময়ে হাসি মুখে থেকে সব কাজ সামাল দিতো। এ ছাড়া সেজদি নাটকের গোষ্ঠী (ছোটোদের) চালাতো। নিজেই স্ক্রিপ্ট লিখতো আর আমরা তখন ছোটো ছিলাম, আমাদের দিয়ে নাটক উপস্থাপণ করতো। বড় বয়েসেও দিদি নাচ করতো, ডিরেকশন দিতো। ন’দি সব জায়গায় গান গাইতো, সঙ্গে দাদা (বুড়ুদা) তবলায় সংগত করতো। সত্যি সেই সব অনুষ্ঠানগুলো খুব প্রাণবন্ত হোতো। একবার সেজদি দুর্ভিক্ষের ওপর একটা নাটক করেছিলো। অমি আর সেজদির ছেলে ভুটান, আমরা দুজনে পার্ট করেছেলাম। নাটকটা নির্বাক ছিলো। দুর্ভিক্ষে খেতে পাইনি, শুধু পেটে হাত দিয়ে সকলের কাছে অনুরোধ করছি যাতে লোকে দুটো খেতে দেয়। প্রায় দুদিন পরে একজন এসে আমার হাতে সন্দেশ ভর্তি একটা ঠোঙা দিয়ে গেলো। আমার তো খাবার দেখে চোখ উজ্জ্বল হলো। ভুটান সেটা দেখে নিয়ছে। আমার খাবার মুখে তোলার মুহুর্তে ছোঁ মেরে আমার হাত থেকে ঠোঙাটা নিয়ে নিজের মুখে সন্দেশটা চালান করে দিলো। অমি হাঁ করে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম আর আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়তে লাগলো, অমি সেই অভুক্তই রইলাম। দর্শকেরা সীনটা দারুন ভেবে নিয়েছিলো, কারণ পরের দিন যখন অমি স্কুলে গেছিলাম, ওপরের ক্লাসের দাদারা আমাকে দেখে পেটে হাত দিয়ে ওই দৃশ্যটা মনে করিয়ে দিচ্ছিলো।
সেজদির পোষা কুকুর ছিলো, বেড়ালও ছিলো। এক একটার এক এক নাম। আশ্চর্য, নাম ধরে সেজদি ডাকলেই, তারা ঠিক হাজির হয়ে যেতো। কুকুরের নাম ছিলো “ফাটকা”। সেজদি তাকে খেতে দিলেই সে সামনের পুকুরটাতে ঝুপ করে একটা ডুব দিয়ে এসে খেতে বসতো। এই রকমই ট্রেনিং ছিলো সেজদির। সেজদির শেষের দিকটা খুব ভালো যায়নি। ৬০/৬৫ বছর বয়সেও দিদিকে একটু দূরের জায়গায় গিয়ে নাচ/গান শিখিয়ে সংসার প্রতিপালন করতে হয়েছে, কিন্তু মুখের হাসিটা কোনোওদিন মলিন হতে দেয়নি।
হ্যাট্স্ অফ সেজদি! তোমার তুলনা তুমি নিজেই।
আজ এই পর্যন্তই।
Anjan, tomar lekhar modhye ager dinner onek chobi fute uthlo. Amar biyer porer din jokhon prathom sasurbarite elam, sejomashir antorikata r mojar mojar golpo amar bhai bonder chere ashar dukho bhuliye diyechilo.
Maima, tumi to sab jano. Aponmone lekhar chesta korchhi, tao Rinki tar utsaho debar jonye. Katodin pare tomar sathe katha bolchhi. Kichhu vul likhle ektu sudhre dio please. Dekhte khub ichhe kare tomader.