Home বিবিধ ক্যালাইডোস্কোপ
বিবিধ

ক্যালাইডোস্কোপ

ভাস্বতী মাইতি

 

অঘ্রাণে হঠাৎ বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া আর মনকেমন করা মেঘলা আকাশ। আমগাছের ভিজে পাতার আড়ালে চুপটি করে বসে আছে দুর্গা টুনটুনি আর আমার জানলার টবে লাফিয়ে লাফিয়ে পোকা খুঁজে চলেছে দুটো ছটফটে চড়ুই। ঠান্ডা ভিজে বাতাসের এক দমকা ঝলক ফিরিয়ে দিলো সেই কত বছর আগের কথা! একজন দাদা একটা ছোট্ট চোঙা হাতে দিয়ে বলেছিলো,”চোখ লাগিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দ্যাখ; খুব মজাদার।”

ছোট্ট ছোট্ট হাতে চোঙাটার একদিকে চোখ রেখে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখি ভিতরে রঙবেরঙের নকশা বদলে বদলে যাচ্ছে; অবাক হয়ে ভেবেছিলাম কি অদ্ভুত ম্যাজিক!

পরে জেনেছি এটি হলো, ক্যালাইডোস্কোপ।

জীবনের পথে এতগুলো বছর পেরিয়ে এসে দেখছি ফেলে আসা দিনগুলো অনেকটা যেন ওই ক্যালাইডোস্কোপ ঘুরিয়ে বদলে যাওয়া নকশা দেখার মত। মনের পর্দাগুলো নিজেদের মত নড়েচড়ে হঠাৎ হঠাৎ ফুটিয়ে তোলে একেকটা নকশা; কখনো চোখে জল আসে, কখনো হাসি; কখনো ফেলে আসা ব্যথা, না বলা কথা — সবই নেড়েচেড়ে বারবার দেখি তবু যেন আশ মেটে না।

মাঝেমাঝেই এমন হয়। কোনো এক সুরেলা সূর্যোদয়, কোনো এক মেঘলা দুপুর, কোনো বৃষ্টিধোওয়া শেষ বিকেলের ছলছলে আকাশ নাড়া দেয় মনের দুয়ারে আর হাট করে কপাট খুলতেই ফিরে আসে কুয়াশা ভেজা এক পাহাড়ি ভোর – দার্জিলিংয়ের ম্যালে ঘোড়ার পিঠে ছোট্ট আমি। লাগাম ধরে এক্কেবারে ঢিমেতালে ঘোড়া ছোটাচ্ছে ঘোড়ার মালিক আর অন্যপাশে আমাকে ধরে রেখে সমান তালে ছুটছে আমার সেই সময়ের যুবক বাবা। কিছুতেই ছেড়ে দেবে না আমাকে; পাছে পড়ে যাই! তারপর তো কেটে গেলো কতগুলো দিন! গতবছর হিমাচলের কুফরিতে আমরা ঘোড়ায় চড়েছি সবাই। আমার এখনকার বাবা; কপালে বলিরেখা আর ঈষৎ নড়বড়ে সেইদিনের সেই যুবক বসে রইলো গাড়িতে; বললো, “আমি তো পারবো না রে! তোরা ঘুরে আয়!”

তখনকার দিনে, আমাদের ছোটবেলায় আমরা তো ভীষণ গায়ে গায়ে ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকতাম! শীত পড়লেই জল্পনা শুরু হয়ে যেত বড়দিনে কি হবে। তখন তো কলকাতায় এরকম মোড়ে মোড়ে কেকের দোকান ছিলো না! সেই নিউ মার্কেটের ‘নাহুমস্’ আর পার্ক স্ট্রিটের ‘ফ্লুরিজ’। এছাড়া হাতের কাছে ছিলো ‘জলযোগ’-এর ট্টেডমার্ক  পান-কেক (পানের মত আকৃতির নরম বাদামি কেক) আর একধরণের গোল কেক; তাতে একটা লেয়ার থাকতো স্ট্রবেরির। স্টেশনারি দোকানে পাওয়া যেত প্লামকেক– তাদের চেহারা এবং মোড়ক কোনটাই আহামরি ছিলো না। স্বাদের কথা তো না বলাই ভালো। আর ছিলো বাড়িতে প্রেশার কুকারে বানানো কেক। সুতরাং ফ্লুরিজের ছোট ছোট পেস্ট্রি কোনো কোনো বার বড়দিনে মামারবাড়িতে আনা হলে সেটাই ছিলো স্বর্গসুখ। অ্যাম্বাসাডর গাড়ি আর হলুদ কালো ট্যাক্সি চেপে কোনো কোনো শীতের সন্ধ্যায় যাওয়া হয়েছে পার্ক স্ট্রিটের ‘ওয়ালডর্ফ’ এ; চিনে খাবার খেতে।

এরপর ছিলো দল বেঁধে বড়দিনে কিংবা ফার্স্ট জানুয়ারিতে চিড়িয়াখানায় পিকনিক। বড় বড় টিফিন ক্যারিয়ারে লুচি তরকারি, কড়াপাকের সন্দেশ, ডিমসেদ্ধ কিছুই বাকি থাকতো না। হাঁটতে হাঁটতে পায়ে ব্যথা হয়ে গেলে সবুজ ঘাসে বসে জিরোতে জিরোতে  আইসক্রিম আর ক্যান্ডি তো ছিলোই। বেশিরভাগ সময়ে মামারবাড়ির সবাই মিলেই যাওয়া হতো।

একবার গেছি পিসিদের আর জেঠুদের সঙ্গে। বিরাট বড় দল; ছোটরা যাচ্ছি লাইন করে।হাতিদের তখন পায়ে শিকল দিয়ে রাখা হতো। সেই জায়গাটায় এসে দাঁড়িয়ে পড়ে হাঁ করে দেখছি আমার এক দাদার সবুজ কোট ধরে। কখন যে দাদাটি সরে গেছে আর আমি অন্য সবুজ কোট আঁকড়ে ধরে আছি, সেটা টের পেলাম একটু পরে যখন কোটের মালিক আলতো করে আমার হাত ছাড়িয়ে টাটা করে চলে গেলো। চারপাশে তাকিয়ে দেখছি আমাদের দলের কেউ কোথাও নেই! সত্যি বলছি কাঁদিনি কিন্তু; শুধু বুঝতে পারছিলাম হারিয়ে গেছি। হঠাৎই দেখি আমাদের সেই পেল্লাই দল হাঁকপাঁক করে দৌড়ে আসছে আমার খোঁজে। সে যাত্রায় আর হারানো হলো না।

এমনই এক শীতে জীবনের প্রথমবার বেড়াতে যাওয়া দেওঘরে। এরপরে তো এত বছরে কম বেড়ালাম না! কিন্তু সেই প্রথমবারের দেওঘরের স্মৃতি কি যে মধুময়! হাড় কাঁপানো ঠান্ডার ভোরে দুধ আনতে গিয়েছি দেওকিনন্দন পোদ্দারের বিশাল ডেয়ারিতে। গিয়ে দেখছি ইয়া তাগড়াই কি সুন্দর সব গরু! এদের নাম জার্সি কাউ শুনে কি বিস্ময়! আমাদের ছোটবেলার সবথেকে বড় মজাটা ওখানেই — সবেতেই ছিলো বিস্ময়। বিশ্বটা তখন মুঠোফোনে বন্দী হয়নি। বিস্ময়গুলো অপেক্ষা করে থাকতো জীবনের নানা বাঁকে।

সেবারেই জীবনে প্রথম শালপাতায় ভাত খাওয়া, ছোট ছোট পাহাড় দেখা। সেটা ছিলো ১৯৮২; আমার ক্লাস সিক্স। বৈদ্যনাথ দর্শনে গিয়ে দেখি মন্দিরের ভিতরে একটা ঘরে টিমটিমে মোমবাতি জ্বলছে, থকথকে পিচ্ছিল জলকাদা আর দমবন্ধ করা ভিড়ে হাজার হাজার ভক্ত ওইটুকু জায়গায় ঢোকার জন্য উন্মত্ত। কোথায় ঠাকুর, কোথায় কি? কোনমতে বাবার সোয়েটার আঁকড়ে ধরে হড়হড়ে মেঝেতে দড়াম করে না পড়ে,বাইরের আলোয় বেরিয়ে শান্তি।

এখন তো সেখানে কত পরিপাটি ব্যবস্থা।

সেবার মস্ত ত্রিকুট পাহাড় দেখে, তপোবনের পাথরের চাঁই আর সুড়ঙ্গ পেরিয়ে, জীবনে প্রথমবার ক্ষীরের প্যাঁড়া খাওয়া।এরপরেও তো গেছি দেওঘর কিন্তু প্যাঁড়ার সেই স্বাদ আর পাইনি।সেটা আমার জিভের দোষ না সময়ের দোষ জানি না।

হামেশাই ক্যালাইডোস্কোপের নকশায় ঢেউ তোলে প্রথমবার পুরীর সমুদ্র দেখা। কি যে সেই আনন্দ! ট্রেনে যেতে যেতে বাবা জানলা দিয়ে দেখাচ্ছে, “ওই দ্যাখো কোলাঘাটের চিমনি; রূপনারায়ণ পেরোচ্ছি আমরা।” অনেক বছর পরে বিয়ে করে সেই রূপনারায়ণ পেরিয়েই গেছি তমলুকের শ্বশুরবাড়িতে। তারপর হাজার বার কলকাতা তমলুক যাতায়াতে পেরোই রূপনারায়ণ আর প্রতিবারই ফিরে আসে সেই মুহূর্তটা। শেষ বিকেলে গাড়ি থামিয়ে মোবাইল বন্দী করি রূপনারায়ণের চরে সূর্যাস্ত।ডিঙ্গি নৌকা মিলিয়ে যায় নদীর বাঁকে, আশ্বিনের চর জুড়ে মাথা দোলানো সফেদ কাশের ঝাড় ধূসর হতে থাকে ক্রমশ; তারপর হারিয়ে যায়। আবার এক বছরের অপেক্ষা।

কত মনখারাপ করা সকাল বিকেল বয়ে আনে বিশেষ কিছু সুগন্ধ — পুজোর আগে আগে বাগানের সবুজ ঘাসে ছেয়ে থাকা শিউলিফুলের হালকা মিঠে ঘ্রাণ আর শীতের দুপুরে দিদুর ছাড়িয়ে দেওয়া কমলালেবুর ঝাঁঝালো মিষ্টি সুবাস।

মনে হয় হাজার আলোকবর্ষ পেরিয়ে গেলেও দিদুর লেপের মধ্যে গুটিসুটি শুয়ে  রামায়ণের গল্প আর শোনা হবে না।

স্মৃতির গলিপথ কি কম! গোলকধাঁধায় ঢুকে পড়ে বেরোনোর সাধ্যি কই!

ছোটবেলায় অনেককেই আমি আমার মত করে নাম দিয়ে সেই নামে ডাকতাম। মামারবাড়ির দাদুর জন্য যুতসই কোনো নিক্ নেম খুঁজে না পেয়ে বলতাম ‘এমনি দাদু’। ডাক্তার মানুষ; শান্তশিষ্ট; নিজের কাজে মগ্ন। অপরদিকে আমার আরেক দাদু (ঠাকুর্দা), তিনি ছিলেন তেমনি দাপুটে। একবার এক শীতের রাতে সেই বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। মশারি থেকে হাত বের করে ছত্রি খুলে নিয়ে মশারির ভেতর থেকে লড়ে গেলেন একতরফা। ঠাকুমার কাকিমা, আমাদের বড়মা, ঘর থেকে বেরিয়ে ছাদে ওঠার চেষ্টা করতেই এক ডাকাত তাকে গলা টিপে ধরে সরিয়ে দিলো একপাশে। বেঁচে রইলো বড়মা ঈশ্বরের কৃপায়।দোতলা থেকে জাঠতুতো দাদা নেমে আসার চেষ্টা করতেই ছুটলো গুলি। গোলমালের শব্দে ও’বাড়ির লাগোয়া বাড়িতে পিসিরা দরজা খুলে বেরোতেই বন্দুকধারী ডাকাত তাদের ঢুকিয়ে দিলো ঘরে। এই প্রলয় কান্ডের মধ্যে পাড়ার ছেলের দল লাঠিসোটা নিয়ে হইহই করে দৌড়ে আসছে দেখে অবশেষে তারা রণে ভঙ্গ দেয়। এখনকার ডাকাত হলে অবশ্য দু চারটে হতাহত হতোই আর এখনকার পড়শীরাও জীবন বিপন্ন করে বেরোতো না।

পরের দিন ভোরে খবর পাওয়া মাত্রই আমরা তড়িঘড়ি পৌঁছলাম। দাদু রীতিমতো জখম হয়েছিলো। অপদার্থ পুলিশ হেলেদুলে এসে ডাকাতদের ফেলে যাওয়া একটি বোমা আর একটি তরবারি উদ্ধার করে নিয়ে গেলো। এখানেই নাটকের শেষ নয়। দুপুর পেরিয়ে হাজির হলো ওই অঞ্চলের কুখ্যাত তিনটি মানুষ। তারা বারবার দাদুকে জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কাউকে চিনতে পেরেছিলেন মেসোমশাই?”

বলা বাহুল্য দাদু বলেছিলো, “না, বাবা। বুড়ো মানুষ আমি।লড়াই করেছি। সেই ঢের। অন্ধকারে কাউকে চিনতে পারিনি।”

সরস্বতী পুজোর আগের দিন মামারবাড়ীতে ঠাকুর সাজাতে সাজাতে চলতো লুডোখেলার হুল্লোড়। বিপক্ষ দলে ছোটমামা থাকলেই ম্যাজিকের মত ওদের কাঁচা ঘুঁটি পেকে যেত আর ‘পুট’ পড়লেই সেটা কিভাবে যেন ছক্কা হয়ে যেতো! তারপর চেঁচামেচি, খেলা ভন্ডুল আরো কত কি!

দুর্গাপুজোর ঠাকুর দেখা নিয়ে তো ইতিহাস রচনা করা যায়। থিম পুজোর বালাই ছিলো না কিন্তু মজার ভান্ডার ছিলো কানায় কানায় পূর্ণ। বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে ভাইবোনেরা ঠাকুর দেখা আর দশমীর দিন দুধ-আলতায় খাগের কলম ডুবিয়ে,দিদুর কেটে রাখা ফালি ফালি কলাপাতায় লেখা হতো ওঁ শ্রী শ্রী দুর্গা মাতা সহায়।

পুজোর পর বিজয়ার পর্ব মিটতে আরো অনেক দিন। দামি খাবারের চল ছিলো না; ঘরে ঘরে নারকোল নাড়ু, নিমকি এসব থাকতো। খুব বেশি হলে চট করে বানানো লুচি বেগুন ভাজা। এতদিনে বেশ বুঝেছি যে আনন্দের উপকরণ মনের ভিতর মজুত থাকলে বাহ্যিক আড়ম্বরের প্রয়োজন থাকে না।

কার্তিক সংক্রান্তিতে শুরু হয়ে অঘ্রাণের সংক্রান্তিতে শেষ হতো দিদুর ইতুপুজো। আমি খুব ছোট তখন।দিদুর সঙ্গে একবার করেছিলাম ইতুপুজো। নিয়মকানুনের কথা কিছু মনে নেই তবে খুব ভালো লেগেছিলো উমনো ঝুমনো নামে দুই বোনের পিঠে খাওয়ার গল্প নিয়ে ইতুপুজোর ব্রতকথা।

পৌষ সংক্রান্তির দিন বাজার থেকে ধানের শীষ এনে তাতে বিনুনি বেঁধে দিদু বানাতো আউনি বাউনি। পিঠেপুলি  যে কতরকমের বানানো হত, তার ঠিক ঠিকানা নেই।

আর ছিলো শীতকালে এ্যানুয়াল পরীক্ষার পরে রবীন্দ্রসরোবরে  স্কুলের এ্যানুয়াল ফাংশন।সেই সব মূহুর্তগুলো সময়ের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে পড়লেও, সেই সব বন্ধুর দল হারিয়ে যেতে যেতেও ফিরে এসেছে ফেসবুকের দৌলতে।

তখনকার দিনে আবার পাড়ার মানুষগুলোও ছিলো অন্যরকম।লক্ষ্মীপুজোয় সব বাড়ি থেকে থালা থালা প্রসাদ আসবে, কালীপুজোর সন্ধ্যায় একজন জেঠিমার বাড়িতে কলাপাতায় লুচি আর সুজির পায়েস খাওয়া হবে আর সামনের বাড়ির কাকিমা নতুন কিছু রাঁধলেই বাটি করে দিয়ে যাবে। এই ঘেঁষাঘেঁষি মেলামেশাগুলো হারিয়ে গেছে। কাছিমের খোলার ভিতর থাকি সবাই। উপায় নেই। যাকে ভালোবেসে মনের কথা বলবো, সেই আবার অন্য কোথাও টেরিয়ে বাঁকিয়ে সেই কথাটি পেশ করে আসবে।সবাই যে এরকম তা বলছি না।তবে অনেকেই ইদানিং এরকম।

মনের আগল খুলে নাড়াচাড়া তো অনেক হলো। ক্যালাইডোস্কোপটি নামিয়ে রাখি এবার। না হলে নকশার জাল বুনতে বুনতে শেষ হবে না কিছুতেই।

Author

Du-কলম

Join the Conversation

  1. খুব ভালো লাগলো পড়ে। ফিরে গেলাম নিজের অতীতে ।

  2. অদ্ভুত এক ভালো লাগা গল্প কথা ,ভীষণ ভালো লাগল। মন ছুঁয়ে যাওয়া 👌👌🙏🙏

  3. অপূর্ব স্মৃতি চারণ। মন ছুঁয়ে গেল।

  4. খুব ভালো বুনন। অনেক আলো পেলাম। একরাশ শুভেচছা রইল।

  5. খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের প্রায় সেই সবকিছুই ক্যালাইডোস্কোপে ধরা পড়েছে। ডাকাতির ঘটনাটি পড়ে শিহরিত হলাম। লুডো খেলার ঘটনাটিও যে জীবনে কতবার ঘটেছে তার ইয়ত্তা নেই। সব মিলিয়ে লেখাটি বেশ ভালো লাগলো। নস্টালজিক অনুভূতি জেগে উঠলো। শ্রদ্ধা জানবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!