Views:
761
সুব্রত ঘোষ
এখনো আগের মতোই বসন্ত বুকের
খাঁচার মধ্যে শীতঘুম ভাঙ্গে
আলাপের গান হয়ে ভ্রমরগুঞ্জনে
জেগে থাকে হৃদয়গভীরে সকল কাজের মাঝে।
একে একে সব ঋতু চলে গেলে
দাঁড়ায় এসে চুপিসাড়ে আমার জানালার ধারে
অপরূপ ঋতুরাজ বেশে অপূর্ব ফুলসাজে।
অস্ফুট স্বরে জাগায় আলতো করে
আসে আজও নব বসন্ত-দুপুরে
আসে যেন অভিসারে আমার স্বপ্নের ভিতরে।
ফাগুনের ছোঁয়া লাগে প্রকৃতির সাজানো বাগানে
পলাশ শিমূলে সোনালী তপন কিরণে
পাতার আড়ালে কুহুরব বারবার প্রিয়জনে ডাকে
বকুলের গন্ধে মন হারায় বহুদূরে
হারায় ভালোবেসে বসন্তের উদাসী হাওয়ায়
প্রকৃতির অনাবিল মিলন মেলায় প্রজাপতি উৎসবে মাতে;
দল বেঁধে উড়ে আসে তারা অন্তরঙ্গ হতে
পরস্পরে চিনে নেয় বড় ভালোবেসে
ভালোবাসার অঙ্গীকারে ফের উড়ে যায়
আরোও অনেক বসন্তে মিলনের আশায়।
আমি দেখি খোলা জানালায় বসে
আজও কত নতুন ফুল আমায় দেখে হাসে
বসন্তের হাওয়ায় দুলে জানায় তারা আমায় ভালোবাসে
ধীরে ধীরে উঠে আমি তাদের দিকে হাঁটি
হেসে তারা লুটিয়ে পড়ে আমিও হেসে উঠি
আলতো করে তাদের আমি ছুঁই
ফিসফিসিয়ে বলি হেসে “আমি তোমার সই”।
বলি আরোও “ভালোবাসা হারিয়েছে রং
পৃথিবীটাই আজ বদলে গেছে কত
আগের মতো হৃদয়মাঝে ঢেউ ওঠে না তত”।
এতো বলেও তবু তাদের দুই হাতেতে ধরে
বুকের থেকে সরিয়ে এবার মুখের কাছে আনি
অসংকোচে দু চোখ দিয়ে রূপসুধা পান করে
তাদের আমি ছোঁয়াই প্রেমের পরশপাথরখানি।
লজ্জা পেলেও যায় না তারা সরে
মনের মধ্যে রংটুকু তারা দেয় যে উজাড় করে।
লেখক পরিচিতি
সুব্রত ঘোষ
সুব্রত ঘোষ কবি ও লেখক হিসাবে দিল্লিতে বিশেষ পরিচিত একটি নাম। প্রায় পাঁচ দশক আগে কর্মসূত্রে দিল্লিতে আসেন এবং গ্রুপ থিয়েটারে অভিনয়, যাত্রাভিনয় এবং বাচিক শিল্পী হিসাবে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠা পান। পরবর্তীকালে সুব্রত ঘোষ কবিতা লেখা ও সাহিত্য সৃষ্টিতে মন দেন। তাঁর লেখা কবিতা, রম্যরচনা, গল্প, প্রবন্ধ, নাটক ইত্যাদি পশ্চিমবঙ্গ, মুম্বাই ও দিল্লির বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এবং ই-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে বা হচ্ছে। সুব্রত ঘোষ উত্তরবঙ্গ নাট্যজগৎ দ্বারা 2018 সালে ‘বিশিষ্ট কবি’-র স্বীকৃতি ও সম্মান লাভ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত কবিতার বই ‘ইচ্ছে পাখি’ পাঠক ও গুণীজন দ্বারা সমাদৃত। সুব্রত ঘোষ দিল্লির ‘দ্যুতি সাহিত্য সভার’ একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তিনি একটি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত।