Home বিবিধ, গল্প পিছুটান
বিবিধগল্প

পিছুটান

পাপড়ি দত্ত

প্রথম অধ্যায়

জানালা খোলা দোয়েল উড়ে এল। মাকড়শা চারিপাশ ঘুরে বেড়াচ্ছে আপন মনে। অগোছালো টেবিল। বইটি আছে খোলা। নাম তার স্বপ্ন। দূরভাষ যন্ত্র টি বেজে উঠল সাড়া জাগানো চেনা ধ্বনিতে, “হ্যালো, হ্যালো……হ্যালো, আমি রুহি, কথা বল…. তাহলে মনে করব তুমিও হয়ত একই রাস্তায় নেমে গিয়েছিলে…।” “হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি সুজয় বলছি, আমি সানি আমি শুনতে পাচ্ছি না…………..হ্যালো, হ্যালো। “সানি রিসিভারটা রেখে দিল। বাইরে হাওয়া ও বৃষ্টির মেল বন্ধনে সৃষ্টি হয়েছে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য তাতে আছে রাতের গভীর অন্ধকারের শিউরে ওঠা প্রেম। জানালার কাছে দোয়েলকে দেখা যাচ্ছে না মাকড়সাও নেই। লেগেছে শীতের পরশ হেমন্তর রাতে। সানি ও রুহি ছোটবেলার বন্ধু ছিল। অনেক বছর থেকেই বুঝতে পারছেনা কেন এইভাবে ফোন বেজে ওঠে, কে ছিল? জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে এসে ভাবতে ভাবতে অগোছালো ঘরের পাশের বারান্দায় দাদুর আরাম কেদারায় বসে টেবিলের বইটা হাতে নিয়েই চমকে উঠল সানি। ততক্ষনে দোয়েল আবার এসেছে তবে ভেতরে ঢোকেনি জানালার কাছে ঘোরা ফেরা করছে হয়ত বা কিছুর অপেক্ষায়। সানি জিজ্ঞেস করতেই পারে কাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে দোয়েল সোনা, উত্তর কি পাবে? না! না! মনের গভীরে থেকে যায় হতাশার চাবুক উত্তর পাওয়া যায় না কোনোদিন। তবে? কি দেখেছে বই হাতে নিয়ে? বইটির অনেক গুলো পাতা ছেঁড়া……তাহলে? বুক মার্ক ঠিক আছে যেখানে চিহ্ন দিয়ে রেখেছিল সানি, তবে? ঝিরঝিরে বৃষ্টি থেমে গেছে চারিদিক কিছুই দেখা যাচ্ছে না,থম থমে গাছগুলো নিস্তব্ধ, পাশাপাশি দাড়িয়ে,নেই কোনো উত্তাপ, নেই কোনো ব্যথা, ওরা বোধহয় ঘুমিয়ে পড়েছে। দোয়েল উড়ে গেল। ওর ঘুমের সময়, সানি বিছানায় বসে রইল ওর চোখে ঘুম তবে সব ভুলে যাওয়ার চেষ্টা। মাকড়সা পাশের ঘরে থাকে তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে তাও অনেক অনেক বছর হয়ে গেল সানির ছোটবেলার সময় থেকে, ওরা সব পাশের ঘরেই থাকে। আবার ফোনের আওয়াজ কিন্তু সানি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সানি এখনও স্বপ্নের দেশে, ঘুমপাড়ানি গান থেমে গেছে, ওর মা পাশে ছিল। সকালের অপেক্ষা।

ঘুম ছিল, স্বপ্ন দেখব, ভোর হবে, আবার কিছু গল্প হবে, গাঁথব আমার প্রতিদিনের কথা। সেদিন ঘুমিয়ে পড়লাম। আমি চিৎকার করে বলতে লাগলাম, “আমি পেয়েছি সোনার চাবি, সোনার ঝাঁপি।”

মন্দিরের ঘণ্টা বাজছে নীচে তাকিয়ে দেখি জল সুন্দর হ্রদ ঘন জঙ্গলে চারিদিক ঢাকা। অ্যামাজন !! এই কি সেই অ্যামাজনের রেন ফরেস্ট সেই হ্রদ? আমার এটা স্বপ্ন ছিল, ঘুম ভেঙে গেছে। পাশেই দেখি বইটা উল্টে পড়ে আছে কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আমার বই, স্বপ্ন!!!!

সোনার শহর দেখেছিলাম, তাকে বলে গোল্ডেন ল্যান্ড অফ প্রমিজ। হাজার হাজার বছর আগে মুইস্কা আদি বাসির রাজত্ব ছিল। সোনার রাজা যে কোনো উৎসবে নিজেকে সোনা দিয়ে সাজিয়ে রাখত। স্বর্ণসম্পদ উৎসর্গ করত এই হ্রদে এটাই ছিল তাদের ভগবানের উপাসনা। তাদের ধারণা ছিল আধ্যাত্মিক শক্তির উপলব্ধি ও সামাজিক উন্নতির মার্গ দর্শন এইভাবেই হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক তারাও স্বপ্ন নিয়ে থাকে, ছুটে যায় কি যেন খোঁজার তাগিদে। কত প্রাণ হারিয়েছে কত জন ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছে। স্প্যানিশরা জয় করেছিল আদি বাসির ভূমি সম্পদ, কিন্তু সোনার শহর, এল ডোরাডোকে কেউ খুঁজে পায়নি। পার্সি ফাওসেটও অভিযান করেছিলেন। তার আলাপ পরিচয় হয়েছিল অনান্য আদিবাসীদের সাথে তবে তিনিও পৌঁছতে পারেননি সোনার শহরে। তাকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি, তিনি অ্যামাজনের জঙ্গলে হারিয়ে গিয়েছিলেন।

আমার স্বপ্ন দেখা শেষ। যা দেখেছি তাতেই আত্মহারা হয়েছি। বইটা পড়তে পড়তে আমিও সোনার শহরকে কল্পনাতেই ঠাঁই দিয়েছি।

দ্বিতীয় অধ্যায়

অনেক বছর আগের কথা। সকাল সকাল ঊষা ছেলেকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিল। স্কুলে যেতে হবে নিখিল কে। ওরা ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। শ্রীলা,মাইকা,সুশি,হৃদম, জিমি ওদের দেখেই নিখিলের প্রথম প্রশ্ন জেগে উঠেছিল কিন্তু সেই মুহূর্তেই রিতেশ মাস্টারের গলার স্বর কানে এলো উনি এসেই জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা এখনও এখানে দাঁড়িয়ে? Assembly-তে যাও।” ব্রেক-এর আগে নিখিল কিছুতেই স্বপ্ন গল্প ওদের বলতেই পারল না। শ্রীলার আগ্রহটা একটু বেশি ছিল। টিফিন বক্স খুলে ভাগ হলো সবার খাবার গুলো। স্বপ্ন গল্প শুনতে শুনতে শ্রীলার মাথা টা কেমন করতে লাগল,”বন্ধ কর তোর স্বপ্নের গল্প আমার শরীর কেমন যেন লাগছে, আমি দেখতে পারছি ওই যে হ্রদ আমায় ডাকছে।” বাড়ি ফিরতেই মা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল, “এই, শ্রীলার শুনলাম শরীরটা খারাপ, রমা ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে। “ও মাঝে মধ্যে জল হ্রদ গর্ত এগুলোর কথা শুনলেই এমন করতে থাকে, পরে ঠিক হয়ে যায় তেমন কিছু না, নিখিল মা কে বলতে লাগল। স্কুলের পড়াশুনোর ফাঁকে ফাঁকে এক্সকার্শনের বিরাট ভূমিকা থাকে। অনেকেই ইচ্ছে প্রকাশ করে আর সেইমত টুর প্ল্যান করা হয়। জিম করবেট নেশনাল পার্ক এ যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হলো। উত্তরাখণ্ড ফুট হিলে এই পার্ক। সাথে আছে ইতিহাসের দিদিমণি ও এনসিসি ক্যাডেটের একজন। দুটো ইনোভা গাড়িতে ছয় ঘণ্টার রাস্তা অতিক্রম করেই ওরা পৌঁছল। শ্রীলা ভালোই ছিল।

রিসোর্ট রুমে গিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা আর সবাই ডায়েরিতে লিখে নিল নিজেদের স্টাডি টুর বৃত্তান্ত। কাল ভোরেই জঙ্গল সাফারি। ভোরবেলায় গাড়ির চালক হুড খোলা গাড়ী ছুটিয়ে নিয়ে চলেছে। ছোট ছোট গ্রাম ক্ষেত পার করে গাড়ি ঢুকে গেল গভীর জঙ্গলে। সারি সারি শিমুল গাছ দাড়িয়ে মাথা উঁচু করে তাকে জড়িয়ে আরও অন্য গাছ। সিঁদুর গাছ তাদের পাশে বল্মীকের বাসা চারিদিক। কিছু বল্মীক তো ১৫/২০ফুট লম্বা। মাঝে মাঝে ছিল গভীর জলাশয়। সাত দিন থেকে বৃষ্টি হওয়াতে রাস্তা গুলো কাদায় ভরা আর একটু পরেই গাড়ির চাকা গেলো ফেঁসে গর্ত ভর্তি কাদায়। সবাই নেমে পড়ল। নিখিল শ্রীলা আর ওরা সবাই এদিক ওদিক যেতে লাগল। সামনে ছিল বড় জলাশয় কত রকমের ফুল ফুটে আছে। তাই দেখতেই ওরা জলাশয়ের কাছে গেল। মাইকা, সুশি, হূদম, জিমি চেঁচাতে চেঁচাতে দৌড়ে এলো ওরাও জ্ঞান হারালো। আরও চার পাঁচটা গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ল। ফরেস্ট ডাক্তার এসে গেল।  ওদের জ্ঞান ফিরল। কিন্তু নিখিল আর শ্রীলার খবর কিছুই দিতে পারল না। ওরা শুধু বলতে লাগল শ্রীলা আগে নেমেছিল জলে সাঁতার জানত না তবে দূর থেকে মনে হচ্ছিল না খুব একটা গভীর হবে। ওকে ডাকতে গিয়ে নিখিল জলে নেমে গেল। আর দেখা গেল না। জলাশয়ের ওপার টা ঘন জঙ্গল ছিল। অদ্ভুত একটা শোকের ছায়া ঘেরা চারিপাশ। রিসোর্টে ওরা ফিরে এলো। দুই দিদিমণি কিছুক্ষন পর এলেন ওনাদের বলা হলো যে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

তৃতীয় অধ্যায়

শরতের চলে যাওয়া তারপরেই কার্তিক, হিমেল হাওয়ায় রোদের লুকোনো মুখ আর ঊষার বাড়ির উঠোনে মহিলাদের আড্ডা প্রায় শেষের দিকে। ছেলে মেয়েরা স্কুল থেকে ফিরবে। নিখিল এসে গেল। ওর হাতে রাখা ছিল লাল শালুকের এক গুচ্ছ। ঊষা জিজ্ঞেস করল, “ও, বুঝেছি তোরা আবার ওই নদীর কাছে গিয়েছিলি? ফুল গুলো তো ঝিমিয়ে গেছে ওরা দিনের আলোয় লুকিয়ে থাকে, বলা হয় ওদের রাতের লাল পরী।” নিখিল ফুলদানিতে জল দিয়ে রেখে দিল। ঊষার মন ধরে না কেবলই বলতে লাগল “কেন যে ওদের তুলে এনেছিস ওরা তো জলেই ভালো থাকে,ওদের না উপড়ে দিলে ওরা আরও দু একটা দিন বেঁচে থাকে, একটু নিজের নিঃশ্বাস নিতে পারে, প্রতি রজনী ওরা অল্প অল্প করে ফুটতে থাকে…।” ঊষার চোখ ভিজে গেল। অহনার কথা মনে পড়ল। ও ছিল ঠিক শালুকের মত।  দিনের বেলায় খুব ক্লান্ত ঝিমিয়ে পড়ে থাকত ঠাকুর দালানে। ঠাকুর বাড়ির ভৃত্য জগৎ আর জমিদার রায় কিশোরের ছত্র ছায়ায় থাকত। তবে রাতের পরী হয়েই ওর স্থান ছিল কোঠিতে। একদিন পাড়াতে হৈ হৈ রব খবর এলো অহনা আত্মহত্যা করেছে, অনেকে বলেছে জমিদার ওকে মেরে ফেলেছে। শালুক দেখতে এত সুন্দর তার কি যে পরিণতি হতে পারে ঊষা ভালই জানে। শালুক ফুল দেখলেই ঊষার চোখ ভিজে যায়। ওদের ভীষণ ভালোবাসে। সব মেয়েই তো শালুকের মত সুন্দর।  বেঁচে থাকে আপন ঘরে কেউ বা জলে কেউ বা প্রেমিকের হৃদয়ে, কেউ হয় অহনার মত ভাগ্যহীনা।

স্বপ্ন! স্বপ্ন! স্বপ্ন!

লাল ফুল, ওই যে কত লাল,চারিদিকে লাল।  রক্ত !!!!!!!!!

না, রক্ত তো নয়! ওরা শালুক! ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে কেউ ওদের তুলছেনা। সানি কি আবার স্বপ্ন দেখেছে? ফোন আজ তো এলো না, কাল কথা হয়নি, আজও হলো না। কে ফোন করছে ……..বলতে থাকে সানি। গভীর জলে হারিয়ে যেতে চাই যেখানে খুঁজে পাব শালুক তোমায়……….।

চতুর্থ অধ্যায়

নূতন বউ ঊষা যেদিন এবাড়িতে পা রাখলো তখন থেকেই ঊষা সংসার দায়িত্ব নিজের হাতেই নিয়েছিলেন। সংসারে ছিলেন শুধু শ্বশুর মহাশয়। স্বামী শেখর নিজের ব্যবসার কাজে ঝুরিগ্রামের বাইরেই থাকতেন মাসে একবার আসতেন। নিখিলের জন্ম হলো। ভবিষ্যত বাণী তে এটাই বলা হলো নিখিলের জীবনে অনেক বিপদ আছে। কেউ বিশ্বাস করত না ভুলেই গিয়েছিল এই সব কথা। ছোটছোট বিপদ এসেছে তবে খুব ক্ষতি হয় নি। একবার ছাদে ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে এমন মত্ত ছিল পড়ে গেলো ছাদের দেওয়ালের ঝুলে থাকা ইলেকট্রিক তারের ওপর। দোতলার বারান্দায় পিলার ছিল হাতের নাগালে সেটা কে ধরে একেবারে বারান্দায় গিয়ে পড়লো। সর্প দংশনে হাসপাতাল–বাড়ি করতে হয়েছে। অনেক ছোটবেলাতে বাড়ির পথ হারিয়ে ফেলেছিল। সাইকেল রিক্সা ওয়ালা ওকে বাড়ি পৌঁছে দেয়। শ্রীলা একই স্কুলে ভর্তি হলো।  ওর বাবা ডাক্তার ছিলেন। বদলির চাকরি তাই ওরা এই পাড়াতে এসেছিল।

দুই দিদিমণি অন্য সবাইকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিল। কর্বেট প্রশাসন জানিয়ে দেয় ছেলেটিকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে মৃত্যু হয়েছে মেয়েটির। লোকালয়ে টাইট সিকিউরিটি এবং সীমান্ত আটকে দেওয়া হলো, ভ্রমনবাসিদের নিষিদ্ধ করা হলো। ওখানকার হাসপাতালে কিছুদিন থাকার পর নিখিলকে ভর্তি করা হয়েছিল ওদের বাড়ির নিকটে মাদার তেরেসা হসপিটালে।

“আমি বেঁচে আছি!” আর কিছু বলছেনা,ধীরে ধীরে সুস্থ হলো ব্রেন সার্জারি করা হলো। হাসপাতাল বেডে বলেছিল পুলিশ অধিকারীকে ঘটনার অল্প অল্প অংশ। নিখিলকে বলা হয়নি শ্রীলার মৃত্যুর কথা। “হ্যাঁ,আমি অনেক বলেছিলাম ওকে আমার কাছে চলে আসতে আসতে গিয়ে হয়তো পা আটকে যাচ্ছিল, হাতে ছিল দুটো শালুক ফুল,আমি ভালোবাসি তাইতো আমার জন্য একটা নিয়েছিল………।”

“একটু পরেই যেন আবছা দেখতে পেলাম ডোরা কাটা বিশাল আকারের জন্তু আগুনের মত জ্বল জ্বল করছে চোখ,ওর মুখে দেখতে পেয়েছিলাম একটা হাত আর লাল ফুল দুটো,তারপর কি হলো মনে নেই।”

পঞ্চাশ যখন ছুঁই ছুঁই নিখিল প্রাণ হারিয়েছিল মারণ রোগে। জানালা খোলা থাকে আজও।  দেওয়াল আলমিরাতে পুরনো বই তেমনি আছে, একটা বই টেবিলে। নিখিলের স্মৃতি শক্তি হারানোর আগেই ওই বইতে অনেক পাতায় অনেক ঘটনা লেখা ছিল নিখিলের কলমে। অতৃপ্ত আত্মা নিখিলের এখনও চারিপাশে সবার চোখের আড়ালে আসে হয়তো। দোয়েল আসে যায় ওর সাথী থাকে সাথে সাথে। অগোছালো চারিদিক কেউ কোথাও নেই বই খোলা টেবিলে। ঠক!ঠক! একটু থেমে আবার ঠক!ঠক!

রুহি সানি সুজয় সব ডাক নাম ছিল। পরস্পরকে শ্রীলা ও নিখিল; রুহি ও সানি বা সুজয় নামেই ডাকত। এই ডাক নাম গুলো কেউ জানত না। কোথায় রুহি কোথায় বা আছে সানি সবই অজানা। ফোনের ধ্বনি মনে হয় আজও বেজে ওঠে। শ্রীলা ও সানি শুনতে পায় তবে সাড়া দেয় না কেউ।

অপূর্ণ ভালোবাসার গভীর ধ্বনি ওরা শুনতে পায়। পুরনো বারান্দার আরামকেদারা পড়ে আছে, অগোছালো ঘর। মাঝে মাঝে দেখা হয় দোয়েলের সাথে সানির আবার মাকড়সা ওরাও থাকে ওদের মত করে। উঠোন আছে।  সানি রুহি প্রতিনিয়ত খুঁজে বেড়ায় ওখানেই তো মা দুর্গার পুজো হয় প্রতিবছর, তাও প্রায় হয়ে গেল চল্লিশ বছর। ঊষা কিছু বছর নিজের হাতে সাজিয়েছে পুজোর নৈবেদ্য, তারপর……এখন সরকারের তত্ত্বাবধানে এই বাড়ি বিশেষ বিশেষ উৎসবে এই বাড়ি নূতন সাজে সেজে ওঠে। ঘর পড়ে আছে বইয়ের কিছু পাতা অবশিষ্ট,এক একটা পৃষ্ঠা ছিঁড়ে পড়ে যায় কালের গভীর সমুদ্রে।

Author

Du-কলম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!