অপর্ণা মুখার্জী
উড়তে উড়তে দূরে পাহাড়ের এক কোণায় গাছের একটি ডালে দুটি পাখী এসে বসলো। হঠাৎ একে অপরের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলো পাশে যে বসে আছে সে তার পুরোন বন্ধু। অনেক দিন পর আবার সেই চেনা মুখের সংস্পর্শে আসার আনন্দ, দৃষ্টিতে বহুদিন পর একে অপরকে খুঁজে পাওয়ার এক অদ্ভুত তৃপ্ততা। শব্দের প্রয়োজন নেই এদের, নীরবতা বলে চলে মনের সব কথা। একটু ছোট্ট আওয়াজ করে সম্মতি দেওয়া, যে কথা তারাই শুধু বোঝার ক্ষমতা রাখে। চারিদিকের পৃথিবী তাদের কাছে সেই সময়ে অনেক সুন্দর, কোনো দুঃখ ছুঁয়ে যায় না তাদের, মনে হয় সকল যুদ্ধ জয় করে নেবে দুজনে; একটু ছোট গলার স্বর বিতরণ করে বলে চলে যেন মনের বহু কথা। তাদের কথার কোনো বর্ণ নেই, না আছে কোনো বাক্য। অথচ সবই তারা বোঝে। অথচ মানুষ কত রকম বাক্য ব্যবহার করেও, অনেককেই অনেক কিছু বোঝাতে অক্ষম থাকে। বলতে বলতে কখন নেমে আসে সন্ধ্যার অন্ধকার, সময় থামতে চাইলেও সেতো থেমে থাকার নয়, দিনের শেষে তখন নিস্তব্ধতা আলাপের রূপ নিয়ে সেরে ফেলে সব সুখ দুঃখের কথা। এলো ফিরে যাওয়ার পালা। একে অপরের পাশে থাকার নিঃশব্দে প্রতিশ্রুতি নিয়ে আবার যে ডাল ছেড়ে উড়ে যাওয়ার সময় এলো। মনের মাঝে দুজনেরই উঠলো একটি প্রশ্ন। পাবো কি ফিরে আবার এই আজকের দিনটি? উত্তরে দৃষ্টিতে আশ্বাসের ছোঁয়া দিয়ে উড়ে গেলো আবার দুজনেই, যতো দূর পাশে থেকে উড়ে যাওয়া যায়।