প্রবন্ধসাহিত্য ও সংস্কৃতি

বই কেনা বই পড়া

অলোক মুখোপাধ্যায়

বই : ঝুলবারান্দা তিনটি মাছ আর একটি বিন্দুবর্তী জলাশয়
লেখিকা : নাহিদা আশরাফী                                                     
প্রকাশক : মুজিবর রহমান খোকা, বিদ্যাপ্রকাশ –৩৮/৪ বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০
পরিবেশক : জলধি, ঢাকা, কবিতা ক্যাফে, ঢাকা।                              
প্রচ্ছদ : আইয়ুব আল আমিন                                                              
মূল্য : ২৫০ টাকা

(গল্পটা বলা খুব প্রয়োজন, অন্তত আমার জন্য। আজ প্রায় দশদিন ধরে আমি গল্পটা বলব বলে ভীষণ রকম প্রস্তুতি নিয়েছি। ভাবছেন কি এমন গল্প যার জন্য একেবারে দশ দিন ধরে প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই তো! কী এমন গল্প? গল্প যেমনই হোক আমার দশ দিন ধরে নেয়া প্রস্তুতিতে আপনাদের দশ মিনিট মনযোগ তো চাইতেই পারি। মানে যারা পড়বেন আর কি। পড়বেনই যখন; আপনার অতি গুরুত্বপূর্ণ মস্তিষ্ক যখন খাটাচ্ছেনই তখন পূর্ণ মনযোগ স্থাপন করুন। এই যে ব্রেনের ইনভেস্টমেন্ট, তা পুরোপুরি উঠে আসবে। ইনভেস্টমেন্ট উইদাউট বেনিফিট; পুঁজিবাদী এই সমাজ আপনাকে মেনে নেবে? না। নেবে না। অতএব, বি অ্যাটেনটিভ।)

গল্পকার শুরুতেই যখন এভাবে কোন এক গল্পের ছবি আঁকেন তখন সেই গল্পে মনোনিবেশ না করে উপায় আছে! ঝুলবারান্দা তিনটি মাছ আর একটি বিন্দুবর্তী জলাশয় পড়তে গিয়ে আপনাকে অ্যাটেনটিভ হতেই হবে। কারণ প্রায় সব গল্পেরই নিজস্ব ডানা আছে। অখন্ড মনযোগ না পেলে গল্প কিন্তু ডানা মেলে উড়ে যেতে পারে।

প্রসঙ্গত জানাই যে অনলাইনে বইটি হাতে পেয়ে মোড়ক খুলে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নেবার আগেই সেটি ছিনতাই করলো বউ। বিবাদে গেলাম না। একবার শুধু মুখের দিকে তাকালাম। কোন প্রশ্ন করার সুযোগ দিলেন না। মনযোগ সহকারে বইয়ের প্রচ্ছদে চোখ তারপর দু চার বার প্রচ্ছদে হাত বুলিয়ে চলে গেলেন ভেতরের পাতায়। আমি সামনে দাঁড়িয়ে আছি খেয়াল করতেই বলে উঠলেন –আরে মাত্র তিনটে গল্প, রাতের মধ্যেই শেষ করে দেব। আমি কথা না বাড়িয়ে স্টাডিরুমে ডেস্কটপে মনোনিবেশ করলাম। সামান্য কিছু কাজ তার পর স্নান পর্ব শেষ করে ঘরে ঢুকলাম প্রায় আধ ঘন্টা পর। দেখি বাঁ হাত ভাঁজ করে দুচোখ ঢেকে তিনি বিছানায় শুয়ে। বুকের উপরে  ডান হাতে ধরা ঝুলবারান্দা তিনটি মাছ আর একটি বিন্দুবর্তী জলাশয়। গায়ে হাত দিতেই চমকে উঠলেন। কয়েক সেকেন্ড চুপ তারপর দু চোখে অশ্রুধারা।

তিনটি নয়, বইটিতে আছে মোট তেরটি গল্প। প্রথম গল্প ‘রক্তজবা, বারবারা ও কালো ফুলদানি’   (একাকীত্বেরও নিজস্ব একটা রঙ আছে, ভাষা আছে……নিঃশব্দে কত কথার সেতু তৈরী হচ্ছে…… ‘নৈঃশব্দের ভাষা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ভাষা’ –কে যেন বলেছিল কথাটা? কেউ কি বলেছিল, নাকি আমার নিজেরই এমন মনে হচ্ছে। বিগত এক মাস বিশ দিন আমি ঘরবন্দি জীবনে একটা জলহীন মৃত মাছের মতো ফ্যাকাসে হয়ে বেঁচে আছি।) বন্ধনীর ভেতরে  গল্পের  অংশ বিশেষে অতিমারীর কারণে বিগত দু বছরে আমাদের যাপিত জীবনের চিত্র ফুটে উঠেছে। শুধু নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার বিষাক্ত দর্শন, অনুভূতিহীন ঘেরাটোপে বন্দী। স্বজন হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে আজও যারা বেঁচে আছি তাঁরা প্রিয়জনের আকস্মিক মৃত্যুর স্মৃতি ফিরে পেলে বেদনাবিধুর হয়ে যাই। ঠিক যেমন হয়েছে আমার সহধর্মিনীর। এই গল্পের অন্যতম চরিত্র গহনের না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার সাথে তিনি যখন মিল খুঁজে পান করোনার অভিঘাতে তাঁর দীর্ঘ দিনের বান্ধবীর অকাল প্রয়াণের। বুকের ভেতর থেকে একদলা কান্না উঠে আসে তাঁর গলায়। গল্প সৃষ্টির সার্থকতা এখানেই।

অতি সম্প্রতি টেলিভিশনের একটি কথালাপ সূত্রে দেখেছি এবং শুনেছি নাহিদা আশরাফী নিজেকে শব্দ কর্মী বলে পরিচয় দিতে ভালবাসেন। মস্তিষ্ক আমাদের চালিকাশক্তি হলেও নাহিদার লেখনীর চলন হৃদয় দিয়ে। অকপটে তিনি বলেনও সে কথা। কবিতার সাথেই তাঁর প্রথম সাহিত্য প্রেম, তাই তাঁর গল্পে প্রায়শই উঠে আসে কাব্যিক গদ্য। আপন খেয়ালে শব্দেরা যেন লুকোচুরি খেলে নাহিদার গল্পে। ঝুলবারান্দা তিনটি মাছ আর একটি বিন্দুবর্তী জলাশয় বইটি পড়তে পড়তে দেখেছি শব্দ দিয়ে কি সুন্দর সব ছবি  এঁকেছেন নাহিদা। গল্পক্রম সাজানো হয়েছে খুব সুন্দর।

এই গ্রন্থের অন্যতম ভালো গল্প ‘খুনী’। আমার লেখার শুরুতেই বন্ধনীর মধ্যেকার অংশটুকু ‘খুনী’ গল্প থেকে উদ্ধৃত। মূল প্রসঙ্গ থেকে বারংবার বাঁক বদল হয়েছে এই গল্পের। (আচ্ছা একটু পেছন ফিরে দেখুন তো আমি গল্পের প্রসঙ্গান্তরে চলে গেছি কি-না। ঘাড় ঘুরিয়ে যে দেখব তারও উপায় নেই। দুটি ভেইনই নাকি ছিঁড়ে ফানা ফানা। আমি তো মৃত্যুর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েই তাকে সহ মরতে চেয়েছিলাম।) খুনী কে? কেন খুন? খুন হলো ক’জন সেসব বলে দিলে গল্পের মজা থাকে না। অতএব বি অ্যাটেন্টিভ! নাহিদা আশরাফী এই গল্পটা এত সুন্দর বুনেছেন যে পাঠক এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলতে বাধ্য। পাঠ শেষে ইনভেস্টমেন্টের রিটার্ন পাওয়া জাস্ট সময়ের অপেক্ষা।

(জন্মেই মৃত্যুর দরিয়ায় সাঁতার কাটা মানুষের নামই বুঝি ‘নারী’?  আমিই বা কার কাছে জানতে চাইব?  আমার সেই সুযোগ কই?  অথচ সব কিছুই তো অন্যভাবে শুরু হতে পারত। মালিহাকে কেউ জোর করে বিয়ে দিত না। মফস্বলের মেয়ে দুটিকে প্রতিনিয়ত র‌্যাগিংয়ের তলায় পিষ্ট হতে হতো না।……..গল্পের গল্পটাও তো অন্যভাবে শুরু হতে পারত। কী, পারত না?) দ্বিতীয় গল্পের শেষের দিকটা উল্লেখ করলাম। গল্পের নামেও অভিনবত্ব -‘অথচ যেখান থেকে গল্পটা শুরু হতে পারত’। হ্যাঁ এটাই গল্পের নাম! কি ভাবছেন, কোন গল্পটা আগে পড়বেন?

‘জয়নাল মিয়ার ৫৭০’ গল্পের মূল চরিত্র জয়নাল। একাত্তরে একুশ বছর বয়সের জয়নাল আর তার বাবা বঙ্গবন্ধুর এক ডাকে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন।  ঠাঁঠা এক দুপুরে বঙ্গবন্ধু হত্যার খবর শুনে হন হন করে জয়নাল সেই যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল; পুরো একটা সপ্তাহ তার কোন খবর পাওয়া গেল না। ফিরে এলেন যখন সে এক অন্য মানুষ। জয়নাল মিয়ার মানসিক পরিবর্তনের ছবি নাহিদা যেভাবে এঁকেছেন ( কামডা কী ঠিক করিছ জয়নাল মিয়া? তুমি না শিল্পী মানুষ। তুমি যদি এম্বা করো তালি পরে বেবুঝ মানুষ কী কইরবে? ……পক্ষে বিপক্ষে নানান জনরব। হঠাৎই কী হলো জয়নাল মিয়ার। ফোঁসফোঁস করে নিঃশ্বাস নিতে লাগল, চোয়াল শক্ত হয়ে দাঁতে দাঁত এমন চেঁপে ধরল যেন দাঁত খুলে পরে যাবে, চোখ দিয়ে আগুন বেরুতে লাগল। ছুটে গিয়ে হাতের শক্ত মুঠিতে জব্বার মিয়ার গলা চেপে ধরে বলতে লাগল, ‘হারামির বাচ্চা রাজাকার, তগো মতন জানোয়াররা ক্ষেমা পাইছিল বইলাই বঙ্গবন্ধুরে আজ জেবন দিয়া তার মূল্য শোধ করতি হল। কী ভাবিছিস? সে মইরে গেছে? না সে মরে নাই। আমি আজও তারে দেখতি পাই।) এই গল্পের বিষয় ভাবনা কি তা সহজেই অনুমেয়।

‘বকুলের ঘ্রাণ’ গল্পেও ফিরে আসে রাজাকার বাহিনীর ভয়ংকর নিষ্ঠুরতা নির্মমতার ছবি। এক দিকে ক্রমাগত প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে হাজারো কল্প কাহিনীর বিস্তার, অন্যদিকে শ্রদ্ধাভাজন দেশপ্রেমিক মানুষজন এবং তাঁদের পরিজনের ওপর নৃশংস বর্বরোচিত আঘাত যাতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশ্বাসে চির ধরে। পরবর্তী প্রজন্ম(যারা অনেকেই রাজাকার পরিবারের সন্তান) তাদের কাছে কথাচ্ছলে সেই নিষ্ঠুরতার কাহিনী তুলে ধরেছেন নাহিদা আশরাফী সৃষ্ট গল্পের চরিত্র। হতে পারেন তিনি জব্বার মাস্টার অথবা জয়নাল মিয়া নয়তো দেশপ্রেমিক কোন বীর সন্তান, স্বাধীন মাতৃভূমিতে দাঁড়িয়ে যাঁর সূর্যোদয় দেখা হয় নি। গল্পের শেষে সেই সন্তানদের একজনের আক্ষেপ  –আহ ঈশ্বর! এ নিষ্ঠূরতা কেন শুনতে এলাম।এই তীব্র সত্য জানার আগে কেন মৃত্যু হলো না আমার? ছুরির মতো, তীরের ফলার মতো এই সত্য রক্তাক্ত করছে আমাকে। এই শরীর ভরা তবে এক পিচাশের রক্ত! এক রাজাকারের বংশধর আমি! বলতে পারেন, কেমন করে বের করে ফেলব এই দূষিত রক্ত? কেমন করে মুছে ফেলব এই বিষাক্ত জন্মের ইতিহাস?  এখানেই প্রতীয়মান হয় নাহিদার কলমের শক্তি যা শুধুই মস্তিষ্ক নয় হৃদয়ের অনুরনন। গল্প পূর্ণতা লাভ করে যখন নব প্রজন্মের সকাতর আর্তিতে সারা দিয়ে গল্পের চরিত্র বলেন -জন্মের জন্য দায়ী তো আমরা কেউ নই। যে সত্য টা জানলেন এবার তার স্পর্শে নিজেকে বিশুদ্ধ করুন। নব প্রজন্মকে সত্যটা জানান। অন্তত কথা বলুন, চিৎকার করুন।

(বড়ো বাড়িটার উপরতলার ঝুল বারান্দা থেকে দেয়াল ঘেঁসে শুয়ে থাকা পুকুরের জলে চোখ পড়লেই অদ্ভুত এক তৃষ্ণা জাগে বিন্দুর মনে।…….একটা মাছ সাঁতার কেটে কেটে ইতস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছে।) ঝুলবারান্দা, তিনটি মাছ আর একটা বিন্দুবর্তী জলাশয় গল্পের শুরুটা হয়েছে এভাবেই। গল্প যত এগিয়েছে গল্পের ভেতর নতুন গল্প সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বাস অবিশ্বাস, প্রিয়জনের অকস্মাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া। সত্যিই নিখোঁজ না গুম করেছে কেউ, নাকি দূর্ঘটনার শিকার? একটি মাছ থেকে সময়ান্তরে দুটি তারপর তিনটি মাছ জলে ঘাই মারে। বিন্দুর কাছে আসে, ফিশফিশ করে কিছু বলতে চায়। বিন্দু বুঝতে চেষ্টা করে ওদের ভাষা। কিসের যেন ইঙ্গিত দিতে চায় ওরা। বাবা মা আর ভাইয়ের খোঁজ বিন্দু পাবে কি? জানতে হলে গল্পের শেষ পর্যন্ত পড়তেই হবে।তেরটা গল্পের মধ্যে আমার প্রথম পছন্দ অবশ্যই ঝুলবারান্দা, তিনটি মাছ আর একটা বিন্দুবর্তী জলাশয়।

‘প্রুফরিডার’ গল্পের প্রশান্ত বাবু ভাল ছবি আঁকিয়ে হলেও বাবার হাত ধরে প্রুফ রিডারের কাজ করতে বাধ্য হন। চারুকলার প্রতি আকর্ষণ এবং ভালবাসা হেতু প্রুফ দেখার পাশাপাশি প্রকাশনা সংস্থার শতাধিক বইয়ের প্রচ্ছদ করে দেন। যদিও প্রচ্ছদ শিল্পী হিসাবে ওর নাম থাকে না। নাম থাকে ‘প্রকাশনীর প্রচ্ছদ টিম’। আবেগে অভিমানে গলা বুজে আসে। তবুও প্রকাশক কে বলতে পারেন না –সারাজীবন ফ্রি সার্ভিসে বইয়ের প্রচ্ছদ করে দেবেন নির্দ্বিধায়, শুধু প্রচ্ছদ শিল্পী স্বরূপ প্রশান্ত বাবুর নাম টা যেন থাকে। ভয় হয় যদি কাজ চলে যায়! তাঁর ভরসায় বেঁচে আছে আরও কয়েকটি প্রাণী। সব কিছুরই একটা সীমা থাকে এবং সেটা অতিক্রম করলেই বিপত্তি। শেষে তাই হলো। সদ্য প্রকাশিত বইয়ের প্রচ্ছদ শিল্পী হিসাবে নাম রয়েছে প্রকাশকের সাথে ফস্টিনষ্টি করা হাঁটুর বয়সী মেয়েটির। খ্যাপা কুত্তা হয়ে যায় প্রশান্ত। শরীরে যেন তার অসুরের শক্তি। ক্রোধান্বিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রকাশকের ঘাড়ে। তার পরের ঘটনা যা হয় আর কি।  পুঁজি জোগায় মালিক অতএব তিনিই আইন তিনিই প্রশাসন। সাজানো মামলায় প্রশান্ত বাবুর ঠিকানা জেলখানা। তবে গল্পের শুরু থেকে শেষ অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী।

‘হাওয়া জীবন’ গল্পের নারী চরিত্র কলকাতা এয়ারপোর্টে নামার পর এক ঝাঁক প্রশ্নের সন্মুখীন হন তবু মেজাজ হারান না। প্রশ্নোত্তর পর্বের কিয়দাংশ ছিল এইরকম…..

– কোথা থেকে এসেছেন?                                                                                             

একবার মনে হলো বলি হিমালয় থেকে। পরে ভাবলাম, না থাক। ভদ্রভাবে দেশের নামও বললাম।  যদিও তা আমার বলার বা তার প্রশ্ন করার কোন কারণই ছিল না। পাসপোর্ট হাতে নিয়েই বুঝতে পারার কথা।

তবু ফর্মালিটি ভেবে শান্ত মাথায় উত্তর দিলাম।                                                                                                          

– কোথায় উঠবেন?

– দিদির বাড়ি।

– দিদির নাম?

– মৌমিতা মুখার্জি।

– আপনি মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে হিন্দু ধর্মের একজন আপনার দিদি হয় কী করে?                                 

কাহাতক আর সহ্য হয়। এবার আমার ভেতরের বাঁদরামি মাথাচাড়া দিল…………………..

– সে আমি কী করে বলব!  আপনি আপনার ভগবানের কাছে জিগ্যেস করুন আর আমি আমার আল্লাহর কাছে। দেখি, তাঁরা কি বলেন। আপনি জানতে পারলে আমায় জানাবেন। ততক্ষণ…..আমি না হয়, অপেক্ষা করি।

এভাবেই পরের পর প্রশ্ন আর উত্তর চলতেই থাকে এবং সুপ্রিয় পাঠক ততক্ষণে  চিনে ফেলেন গল্পের প্রধান নারী চরিত্রকে। নাহিদার কলমে যে তখন শুধুই আবেগ আর মুঠোমুঠো ভালোবাসা।                       

…দুই থেকে সাত……খুব কি বেশি সময়? এরই মধ্যে বাংলাদেশের বন্ধুরা ইনবক্সে, ফোনে , মেসেজে রেগেমেগে বলছে কলকাতাতেই থেকে যা। আর আমার কলকাতার বন্ধুরা? ‘এত কম সময় নিয়ে কেন আসবি? ফের এলে কমপক্ষে একমাস থাকবি’। আরো কত কথা!                                                                       

সময়ের হিসেব সব গোলমাল করে দেয়। হাওয়াজীবন গল্পটি স্নেহ ভালবাসা দিয়ে মোড়া বিন্দাস বেড়ে ওঠা এক চারাগাছ।

বাকী গল্পের মধ্যে আগাগোড়া স্মার্ট প্রেমের গল্প ‘মধুময় বারোটা’। এছাড়া মোনঘর, পেনিলোপ সীতা ও আমি, হাওয়াকলের গান, প্রত্যাশিত প্রেমিক ও একটি মৃত্যু চুম্বন ইত্যাদি ভিন্ন স্বাদের গল্প এই গ্রন্থটিকে সমৃদ্ধ করেছে। সব গল্প নিয়ে দু চার কথা লিখতে পারলে ভাল হতো কিন্তু লেখাটা আরও দীর্ঘায়িত করা সমীচীন হবে না। যতটুকু লিখেছি পাঠক সহ্য করলে বর্তে যাব আর কি!

পরিশেষে বলা দরকার বানান এবং দুটি শব্দের মাঝে স্পেস ইত্যাদি বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন ছিল। যদিও ‘প্রুফরিডার’ গল্পের প্রশান্ত বাবুর মতন ভালো প্রুফ রিডার পাওয়া এখন নিতান্তই ভাগ্যের ব্যাপার। সবশেষে বলতেই হয় ‘ঝুলবারান্দা তিনটি মাছ আর একটি বিন্দুবর্তী জলাশয়’ বইটির প্রতি উৎসাহী পাঠকের কোন ইনভেস্টমেন্টই বিফলে যাবে না।

Author

Du-কলম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!