Home বিবিধ, গল্প কলমে ডঃ ময়ূরী মিত্র
বিবিধগল্প

কলমে ডঃ ময়ূরী মিত্র

ডঃ ময়ূরী মিত্র

থৈ থৈ 

 

দন্ডীরহাট। আমার গ্রাম। আমার শেষ যাওয়া ভরা বর্ষায়। চোদ্দ পনের হবে তখন আমার। পৌঁছোবার দিন থেকে সেই যে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল থামার নাম নেই। বৃষ্টি পড়ামাত্তর ছুটতাম পুকুর পানে। প্রতিদিন মাপতাম, বৃষ্টি আজ কতটা ভর্তি করলো পুকুরটাকে! কাল যদি ফের ঝরে তো আরো কত ফুলবে রোগা পুকুর! ঠিক কতটা বৃষ্টিদানা জমলে চোখের নিমেষে পুকুর সাগর হয়ে উঠবে! 

একদিন প্রবল বৃষ্টি নামলো। যতদূর মনে হয়, সেটাই ছিল সেবারের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির দিন! বারান্দা থেকে সামান্য দূরের রান্নাঘর অব্দি দেখা যায় না বৃষ্টির চোটে! আমাদের বাড়ির সবচেয়ে ডাকসাইটে মহিলা আমার ছোট ঠাকুমা! ভয়ডর কাকে বলে জানতেন না। যদি কখনো বলতাম — আঁধারে ভয় লাগে — খুব রেগে যেতেন! ভয় শব্দে ঘেন্না চোখে তাকাতেন। স্বামী সন্তান নিয়ে জুত করে সংসার পেতেও এক ধরনের একা বাঁচার জেদ ছিলো ছোটঠাকুমার। তো আমার সেই সবচেয়ে ডাকাবুকো ঠাকুমার কাছে সেবারের সবচেয়ে বৃষ্টির দিনটিতে আমার প্রার্থনা ছিল — আমায় নিয়ে টইটুম্বুর পুকুরে চান করতে হবে। কারণ জানতে চাননি। সাহসী প্ল্যান — বোধহয় এই যুক্তিতেই পিঠে আমায় নিয়ে সাঁতার দিচ্ছিলেন ছোটো ঠাকুমা। বাদুড়ের মত ঝুলতে ঝুলতে মুখ চোখ বুজে আসছিল বৃষ্টি ফোঁটায়। আদ্দেক শরীর ডুবে সেদিনের বাড়ন্ত পুকুরে। হাত বাড়িয়ে ধরতে চাইছিলাম ডাগর জলজ ফুল। ভাসা পুকুরের ছিপছিপে পাতালতা! 

শরীর মন তখন তো আলাদা করে বুঝতাম না। কামনা ইচ্ছের তফাতও না। কেবল কেমনতর যেন একটা লাগছিলো সেদিন! কেবল মনে হচ্ছিল — দেখিই না একবার পরখ করে! কোন জল আমায় শীতল করে! আবেশে বুঁজিয়ে দেয় দু’চোখ! পুকুরজল নাকি আকাশজল? 

এর অনেকদিন বাদে পুরুষ এল আমার কাছে! প্রথম পুরুষমানুষ! আমার বারিষপুকুর! সেও যেন সেদিনের সেই কেমনতর!

যুগ গেল। মারী এল স্রোতের মতো। মানুষ মরল পটকাবাজির মতো ফটাফট আওয়াজ তুলে। আজকাল রাতে বাইরে কুকুর আর শিয়ালের যুগল গলা পাই। শুনতে পাই মানুষের অভাবে শিয়াল বেরোয় জোছনার রাজপথে। মৃত্যুভরা অগণিত রাত আসবে কি আরো? চাঁদগন্ধী মদ্দের Fanta Touch তাহলে জাগবে আরো আরো।

মড়ার পাহাড়ে টুসটুসে Satisfaction !!

চ’ পুতুল, বাজারে খেলি 

 

ছেলেবেলায় পুজোর বাজার করার সময় সবার আগে মনে হতো, আমার পুতুলগুলোর জন্য কিছু একটা কিনি। বাটা কোম্পানির ফাঁকা বাক্সে অপেক্ষায় থাকত আমার পুতুল খোকাখুকি।

মনে হত কিনি। পুজো এসে গেল — কিছু তো একটা কিনতেই হবে এদের জন্য। একটা লাল টুকটুকে ঘাগরা কিংবা ছোট একজোড়া গোলাপি পুতুলবুট?  আমাদের সময় পুতুলের জুতোর খুব চল ছিল। আমাদের স্কুলের নিউকাট জুতোর মতোই দেখতে হত সেগুলো। পুতুলের সরু সুঠাম পাগুলোকে কী Easily যে ঢুকিয়ে দিতাম খেলনা নিউকাটের ফাঁকে। প্লাস্টিকের বেল্টও বেঁধে দিতাম জুতোর গায়ে। ঝটপট। 

পঞ্চমীর দিন থেকেই জুতো মোজা পরে ফিট হয়ে থাকতো জুতোর বাক্সের বাসিন্দা। তখন মায়ের হাতে বেশি পয়সা থাকত না তো। তাই পুতুলের নতুন জুতো কিনে দিলেও তাদের জরিদার ঘাগরা কোনোদিনই কিনতে পারেননি। মনে আছে — নতুন জামা দিতে না পেরে পুতুলগুলোকেই ধরে মারতাম আর ভিখিরি বলে মুখখারাপ করতাম। অক্ষম ক্রেতার যত রাগ তখন তার পুতুলগুলোর ওপর। উৎসবে কেন কেবল তারাই সাতরাজ্যের বাসী জামাকাপড় পরবে? 

একবার মা করলেন কী — আমারই আগের পুজোর একটি ঝকঝকে জামা ইস্ত্রি করে তার মধ্যে সব পুতুলগুলোকে বসিয়ে দিলেন। একটি জামার গলার কাটা জায়গা দিয়ে বেরিয়ে আছে চারটে পুতুলের চার চারখানা পুতুল মুখ। চোখের নীল নীল মনি, পিঙ্ক পিঙ্ক ঠোঁট। তাতেও মন ভরলো না। ঘুরিয়ে দিলাম পুতুলগুলোর মুখ বিভিন্ন দিকে। অন্তত পাঁচ ছ দিকে। নাচতে নাচতে যে দিকে যাই সে দিকের পুতুল বলে ওঠে — এই দেখ নতুন জামা পরেছি, কেমন! গোটা জামাটাই কিন্তু পুরো আমার।” 

যাই ঈশান দিকে। আনন্দে নাচছে আমার ঈশানপুতুল। নাচছে আর দুলে দুলে বলছে — “ভুল। মহাভুল। ওটা ওর কেন হবে? এটা তো আমার! কিনে দিলে না সেদিন? বসিয়ে দিলে না আমায় তোমার জামার মাঝে?  ভুলে গেলে — ?” 

ময়ূর মালকিন ততক্ষণে ছুটছে পুব দক্ষিণে। কাঁদছে ঈশানী। দখিনা পুতুল হাসে!

পুতুল বেড়েছে শ শ। কমেছে জামার উলসুতো।  

বড্ড ওরা গোটার জন্য চেঁচায়।

কান্না তার সূর্য হয়ে যায়।

সুতো নেই 

 

সন্ধের পর থেকে নাগেরবাজার অঞ্চল আজকাল বড় শব্দহীন লাগে। কৌতূহল নিয়ে কয়েকদিন রাতে নিচে নেমে দেখেছি — সব ঘুটঘুটে আঁধার। অথচ রাস্তার সব আলো জ্বলছে। তবু আঁধার আর আঁধার। মনটাকে বারবার কচলে নিয়ে বোঝার চেষ্টা করে যাচ্ছি — কেন আলো জ্বলা পথে সব কালো লাগে আমার! কেন মনে হয় পৃথিবী নয় — এক ভিন্ন গ্রহে ঘুরছি আমি? কেন? কেন? 

তবে কি মানুষের আনাগোনায় গ্রহের নাম ঠিকানা — আলো আঁধারের ভারসাম্য নির্ধারিত হয়? 

তাই তো! পথে মানুষ যখন চলে ল্যাম্পপোস্ট আর মানুষ দেখার আনন্দ দুইয়ে মিলে একটা নতুন রশ্মি তৈরি করে। কী সে রশ্মি বলতে পারি নে! তবে  আঁধার পথে সে যে নেই তা বুঝতে পারি বেশ।

খানিক দাঁড়িয়ে থাকি। দূরে ওষুধের দোকানে একটিমাত্র লোক বসে থাকে। ইচ্ছে করে তার সাথে দু এক কথা বলি। তারও হয়ত — 

তবু দুপ্রান্তে দুজন একাই দাঁড়িয়ে রই । 

একপাশে পরে থাকে প্রিয় কাগজওয়ালার চৌকি। সদ্য হাসপাতাল থেকে ফিরে সে বড় জীর্ণ হয়ে গেছে। রাতের আড্ডা ছেড়েছে সে। শুধু ভোরে এসে ছোট লাঠি হাতে দরজায় টোকা দেবে পাছে দরজা ছুঁলে কাগজ নেওয়া বন্ধ করে দি — তাই হাতে এক পাটকাঠি। দণ্ড মেরে কাগজ দেয়। আজ দেখলাম হাত কাঁপছে তার। এখনো খুব দুর্বল। মাস্ক ছিঁড়ে গেছে দেখে বললাম — অল্প টাকা তো! আমি এখন দিয়ে দি। কিনে নিন নতুন। হাতের পাটকাঠি কাঁপল। চলে গেল। বাড়তি নিল না আমার সওদাগর।

আমরা তিনজন — একা।

সুতো নেই। 

তাই গাঁথা হল না তিন ফুলের মালা —

সুগন্ধী 

শুরুর সে দৃশ্য :: তখনো অখন্ড দেশ। দেশের মানুষের একটাই পরিচয় তখন — তারা সব এক দেশের। আমার বাবা মনোজ মিত্র মশাইযের তখন চার কি পাঁচ বছর। বড় হচ্ছেন খুলনা জেলার ধূলিহর গ্রামে। ঈদ আসছে গ্রামে। ঠাকুমার কাছে বিচিত্র এক বায়না জুড়লেন বাবা। —“ওদের মতো আমিও ঈদ করব মা আমাদের উঠোনে। ওরা কী সুন্দর নতুন স্টাইলের পোশাক পরে ,কি সুন্দর কাঠের পাত্রের ওপর বই রেখে দু পা মুড়ে পড়ে। আমিও ওমন পড়ব। আর তারপর ওদের সবাইকে নিয়ে গোল হয়ে বসে মাংস খাব । তুমি রাধবে মা!” ধর্ম ধর্মগ্রন্থ কোনটাই কোনোদিন বোঝেননি বাবা। বোধহয় বুঝতে চানওনি। তাই প্রতিটি ধর্মগ্রন্থ আজো তাঁর কাছে সুন্দর গ্রন্থ। মনোজের ভু-গ্রন্থ। হ্যাঁ, যে কথা হচ্ছিল — আমার চিরপ্রসন্ন ঠাকুমা রাধারানী সেদিন ছেলের আবদার মিটিয়েছিলেন কড়ায়গন্ডায়। ঈদ আসার আগেই পাশের সানাবাড়ির বউকে অনুরোধ করেছিলেন, ছেলের জন্য একটি ফিটফাট ঈদ পোশাক বানিয়ে দিতে। ঈদ এলো। ভোর ভোর চান করে বাবা পড়লেন ঈদের পোশাক। সাদা পাঞ্জাবি, চুস্ত পাজামা আর একটি সলমা জরি টুপি। ছোট মাথায় সামান্য ঢলঢলে হল টুপি। তারপরেও ঠাকুমা দেখছেন, মুখ হাঁড়ি বাবার। “কী রে, দিলাম তো সব সাজিয়ে, আবার কী!” ফিক করে হেসে কানটি এগিয়ে দেন সামনে — ” কানে আতর ? ওমা ওরা উৎসবে কী সুন্দর গন্ধ ঝরায়, আমরা কেন ওমন করি না মা ? ” পুরো মুসলিম না হতে পেরে বড় নির্ভেজাল খেদ সেদিন বাবার। কানের ফুটোয় রাধারানী ঢাললেন তাঁর চাকুরিজীবি বরের দেয়া লুকোনো সুগন্ধি । ভালোলাগায় দিশাহারা হল বালক মনোজ। বড্ড হুটপাটি লাগিয়েছে আজ। মা কাকিমারা মাটির বাড়ির মাটির ওপর বিছিয়েছেন মাদুর। আর সেখানে পা মুড়ে কোরান পড়ার এক নির্ভুল ভঙ্গিমা ফুটিয়েছেন একালের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা। পাশে সার সার সুগন্ধী বন্ধু। 

দৃশ্য শেষ :: দেশ ভেঙেছে। রান্নাঘর, শোবার ঘর, গোয়ালের গরু, সব ভাগ। গোবর ঘুঁটে শুদ্ধু ভাগ। ওপারের পশু আসতে পারবে না এপারে। বাবা রওনা দিয়েছেন স্বাধীন ভারতের পথে। নৌকায় বসে পিছু ফিরলেন। ওদিকের পাড়ে তখনো দাঁড়িয়ে আছে তাঁর প্রিয় কুকুর ভূলু। বালক ভাবছে — চলে যাচ্ছি। ভুলুর গায়ের ধুলোমাখা ঘা পাঁচড়ায় কে বোলাবে ওষুধ? আঁচল ধরে ফের বায়না আমার চিরকালের জেদি বাবার — “মা, খেয়াল রেখো, কদিনের মধ্যেই চলে আসতে হবে কিন্তু ভূলুর জন্য ভালো ওষুধ নিয়ে! বাড়ি যা রে ভূলু! বোকার মত দ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকিস নে। আমি তো আসছিইই!” রাধার চোখ কাঁদে। মন কাঁদে। কান্নার ঝাঁকুনিতে স্তন ফোলে সমুদ্রসম। সুগন্ধী পুত্ররা সব হারিয়ে যাচ্ছে যে  ছেলের মুখ জোর করে ঘুরিয়ে দেয় রাধা ! সামনে স্বাধীন ভারত! রিক্ত! নীরক্ত! বালক বিব্রত।

ডঃ ময়ূরী মিত্র

গদ্য ও নাট্যকার। ২০০৯ এ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে PHD করেন ডঃ পবিত্র সরকারের অধীনে। বিষয় : ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালি বুদ্ধিজীবীর রাজনৈতিক উত্তরণ ও নাটকে রাজনীতি। এছাড়া, কোরক প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্রের Hearing Impaired শিশুদের বিশেষ প্রশিক্ষক। নোটো থিয়েটার ট্রুপের নাট্যশিল্পী ও নাট্যকর্মী।

Author

Du-কলম

Join the Conversation

  1. ‘সুগন্ধি’ একটা স্মৃতি চারণ নয়,অন্ততঃ আমার কাছে।আজ ময়ূরী সেই এক দরদী মনের উত্তরাধীকারিণী।
    প্রতিটি লেখা,সংলাপ কথা বলা আর অভিনয় যত দেখছি ততই অবাক হচ্ছি।সৃষ্টিধরের এই এক অপূর্ব নমুনা।

    1. খুব ভালো লাগল। আর বিশেষ করে প্রথম গল্পটি।।
      ঐ দন্ডিরহাট( বসিরহাট) – আমার জীবনের একটা বিশেষ অধ‍্যায়। ওখানে আমার আত্মিক যোগ প্রায় কুড়ি বছরের।
      একটা ভালবাসার সম্পর্ক – যা আজ ও অমলিন

  2. চারটি গল্পই আলাদা অভিমুখ হওয়া সত্ত্বেও গভীর ভালোবাসার কাছে নতজানু।

  3. খুব সহজ ভাষায় সুন্দর সাবলীল মন ছুঁয়ে যাওয়া লিখন

  4. লেখাগুলো বড়ো সুন্দর। মন-কাড়া বর্ণনা ও ঘটনা।

  5. I have read your writings and commented also.I don’t know whether it is filtered out or not.All the stories are related with different subjects, different places,but you have accomplished everything embracing with the most lovable word “LOVE”

  6. এক একটি লেখা এক একটি নাটকের পটভূমি। সুগন্ধি কিন্তু  হৃদয়ে আঘাত করল😢

  7. তিন, দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ ভালো লেগেছে। পুতুল ও দেশ ভাগ অনন্য। তবে ধুলিহর থেকে নৌকোয় আসতে হতো না। স্থলপথেই ঘোজাডাঙা সীমান্ত।

  8. তিনটি লেখা, দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ ভালো লেগেছে। পুতুল ও দেশ ভাগ অনন্য। তবে ধুলিহর থেকে নৌকোয় আসতে হতো না। স্থলপথেই ঘোজাডাঙা সীমান্ত।

  9. জানিনা কেন, এই প্রথম বাংলা গদ্যে ‘easily’ এতো ‘পিঙ্ক পিঙ্ক’ রঙ দেখে আমি হোঁচট খেলাম না – কৃতিত্ব অবশ্যই লেখকের।
    ড: ময়ূরীর বহুমাত্রিক সৃষ্টিযাপন মুখবই দূরত্ব থেকে আমার মুগ্ধ দেশদ্রোহী অতিমারী যাপনে গোপনে সম্পৃক্ত। এ আমার এক নিষিদ্ধ অভিসার।
    এই চারটি গদ্যপাঠে তৃপ্তি কান্নার সাথে সাথে কখন যে সূর্য হয়ে গেলো, জানিনা। এই না জানায় বিমূর্ত থাক আমার যাবতীয় satisfaction…..

  10. চারটি গল্পই গভীর অনুভূতির। তাই চটজলদি প্রতিক্রিয়া দিতে বাধো বাধো লাগে। মনে হয়, বহুদিনের অভিজ্ঞতার নির্যাস প্রকাশ পাচ্ছে এমন ছোট ছোট রচনায়। যে কোনও ব্যক্তি মানুষ যেমন বহুমাত্রিক, এই চারটি রচনা যেন এক ব্যক্তির বিভিন্ন দিক আমাদের সামনে তুলে ধরে।
    লেখকের নিজস্ব একটা স্টাইল আছে, সেটিও (সচেতন ভাবে হোক বা না হোক) ওনার স্বাতন্ত্র্য প্রকাশ করে। ওনার নিজস্ব ঘরানা যেন। নাটকের লোক বলেই কি এত সহজে চিত্রকল্প তুলে ধরতে পারেন সবার সামনে? কি জানি।
    উনি আরও লিখুন, এবং সুস্থ থাকুন, এই প্রার্থনা।

    1. গল্প নয়। জীবন।
      অভিবাদন জানাই কলমকে।
      🌿⚘🌿

  11. প্রতিটি গল্পেই আছে আলাদা স্বাদ গন্ধ। তবে আমার মন কেড়ে নিল “সুগন্ধি”। আমারও দেশের বাড়ি ছিল খুলনাতে। স্মৃতি বড় নিষ্ঠুর।

    1. একেকটি গল্প একেকটি ভাবনায় পরিপূর্ন।কি সহজ ও সুন্দরতায় ভরা প্রকাশ।

      আমি সব ভাল লেখাই সময় নিয়ে পড়ি।এগুলো পড়তে পড়তে আমার অনুভূতিগুলোর রঙ বদলাচ্ছিল ঠিক যেমন ময়ূরীর চেতনায় রঙ বদলেছে চরিত্রগুলিতে।

  12. ভালবাসার চার রঙে ছবি এঁকেছেন ময়ূরী মিত্র।
    এ যেন রঙের বাহার! অনুভূতি অনন্য!
    আমার কাছে সেরা লাগল দু’টো রঙ —
    সুগন্ধি — যাতে প্রকাশ পেয়েছে ভালবাসা থেকে বিচ্ছিন্ন হবার দমবন্ধ করা বেদনা।
    পুতুল — যাতে প্রকাশ পেয়েছে ভালবাসার টানে ‘গোটা’ হয়ে থাকার তীব্র আকাঙ্খা।

  13. আমার অত্যন্ত প্রিয় মানুষ, সুলেখিকা, নাট্যকর্মী, শিক্ষক – এই সব পরিচয়েরও ওপরে এক দরদী মনের অধিকারী ময়ূরী মিত্রকে বারবার তাঁর লেখায় খুঁজে পাই। মুগ্ধ হই তাঁর শব্দচয়নে, নৈর্ব্যক্তিক দূরত্ব থেকে মৃদু উদাসীনতায় জীবনকে দেখতে পাওয়ার ক্ষমতায়। অন্তুরের শুভেচ্ছা জানাই। ভাল থাকুন।

  14. আগেও পড়েছি, আবার পড়লাম। বদল হয়েছে সময়ের তালে।
    দেখা, বুঝে নেওয়া আর প্রকাশ করা-এই তিন ঠেকায় যেমন থিয়েটার তেমনি লেখাও। অন্তরে বাজে সুর।
    ” অন্তর মিশালে তবে তার অন্তরের পরিচয়।” – গুরুদেব ।
    তফাৎ করলে , ‘ সুতো নেই ‘ অসাধারণ।

  15. অপূর্ব লেখা। কত ছোট ছোট বিষয় নিয়ে কি সুন্দর করে লিখেছিস। detailing যেমন আছে, একটা অন্তর্নিহিত message ও আছে। তোর সোনার কলম হোক।

  16. পড়লাম। ব্লগের কিছু নিজস্ব চাহিদা থাকে, সবই মিটেছে, কাজেই ফর্মের দিক থেকে সুপ্রযুক্ত।
    পড়ার পর মনে হল দেখেছি, পড়িনি। খুব জ্যান্ত, সিনেমা যেমন হয়। কিন্তু এর থেকে ছোট ছবি করলে ম্যাজিকটা মরে যাবে। অ্যানিমেশন করলে দুর্দান্ত হবে।

  17. আমার ভাষা কেড়ে নিলে। প্রতিটি গল্পে আলাদা করে আমার আমিকে দেখতে পেলাম। কলকাতার দূষণ খূব বেড়ে গেছে। পড়তে গিয়ে খুব চোখ জ্বালা করছিল।

    আশীর্বাদ নিও।

Leave a Reply to অমর মিত্র Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!