Home বিবিধ, প্রবন্ধ গৌড় বঙ্গে মাৎস্যন্যায়
বিবিধপ্রবন্ধ

গৌড় বঙ্গে মাৎস্যন্যায়

শৈবাল কুমার বোস

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর গৌড়মল্লার উপন্যাসের মুখবন্ধে লিখেছেন “.. গৌড় রাজ শশাঙ্কের মৃত্যু পর গৌড় বঙ্গে শতবর্ষ ধরিয়া মাৎস্যন্যায় চলিয়াছিল,  চারিদিক হইতে রাজ্যগৃধ্নু রাজারা আসিয়া দেশকে ছিন্নভিন্ন করিয়া দিয়াছিলেন। একদিক হইতে আসিয়াছিলেন জয়নাগ ভাস্করবর্মা, অন্যদিক হইতে হর্ষবর্ধন। তারপর আরও অনেকে আসিয়াছিলেন, বাংলাদেশ লইয়া কাড়াকাড়ি ছেঁড়াছেঁড়ি পড়িয়া গিয়াছিল। …” শরদিন্দু বর্ণিত শতবর্ষ ব্যাপী এই মাৎস্যন্যায় আজকের প্রবন্ধের বিষয়।

শশাঙ্কের মৃত্যু

ঐতিহাসিকরা অনুমান করেন যে শশাঙ্ক ছিলেন মগধের গুপ্তরাজবংশের বংশধর।তিনি মহাসেনগুপ্তের পুত্র বা ভ্রাতুষ্পুত্র ছিলেন।  তাঁর নাম ছিল নরেন্দ্রগুপ্ত। হর্ষবর্ধনের সভাকার বাণভট্ট রচিত হর্ষচরিতে বহুজায়গায় নরেন্দ্রগুপ্তের উল্লেখ পাওয়া যায়। যে সমস্ত মুদ্রা শশাঙ্ক নামে মুদ্রাঙ্কিত তার এক পিঠে নন্দীর পৃষ্ঠে উপবিষ্ট মহাদেব মূর্তি এ অন্য পিঠে পদ্মাসনে সমাসীনা লক্ষ্মীর মূর্তি আছে। প্রাচীন গুপ্তযুগের স্বর্ণমুদ্রার সাথে তুলনা করলে দেখা শশাঙ্কের মুদ্রার সাথে দু একটি পার্থক্য থাকলেও গুপ্তযুগের মুদ্রার স্বর্ণমুদ্রার বিশেষ সাদৃশ্য আছে, প্রথমত মুদ্রার একপিঠে লক্ষ্মীর মূর্তি দ্বিতীয়ত মুদ্রার অপরপিঠে রাজার নাম লিখনের যথা নামের এক অক্ষরের নীচে আরেক অক্ষরের অংকন পদ্ধতি। অনুমিত হয় যে তিনি দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তর পুত্র গোবিন্দগুপ্তের বংশধর। আনুমানিক ৬০৬ খ্রীষ্টাব্দ নাগাদ শশাঙ্ক গৌড়ের সিংহাসনে আরোহণ করেন। শশাঙ্ক শৈব ছিলেন ও কমবেশী বৌদ্ধবিরোধী ছিলেন। আনুমানিক ৬৩৭-৬৩৮ খ্রীষ্টাব্দ নাগাদ শশাঙ্কের মৃত্যু হয়। এই সময়ে হিউয়েন সাং মগধ ভ্রমণে এসে জ্ঞাত হন যে কিছুকাল পূর্বে শশাঙ্ক বুদ্ধগয়ার বোধিবৃক্ষটি কেটে ফেলেছেন। এই পাপের ফলে শশাঙ্ক কুষ্ঠ জাতীয় রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বৌদ্ধগ্রন্থ মঞ্জুশ্রীমূলকল্পেও একই কাহিনীর পুনরাবৃত্তি আছে। তবে এই কাহিনীর সত্যতা নিয়ে বহু ঐতিহাসিক সন্দিহান।

শশাঙ্কের মৃত্যু পরবর্তীকালে গৌড় ও বঙ্গ

শশাঙ্কের মৃত্যুর পর গৌড় ও মগধের অধিকার নিয়ে কাড়াকাড়ি পরে যায়। মঞ্জুশ্রীমূলকল্প নামে এক বৌদ্ধ গ্রন্থের লেখক  মানব নামে শশাঙ্কের এক পুত্রের উল্লেখ করেছেন তিনি নাকি ৮ মাস ৫ দিন রাজত্ব করেছিলেন, কিন্তু অন্য কোনো সাক্ষ্য না থাকায় এ নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। তবে শশাঙ্কের মৃত্যুর পর পারস্পরিক হিংসা বিদ্বেষে গৌড়তন্ত্র বিনষ্ট হয়ে যায় এটি সঠিক। ৬৩৮ খ্রীষ্টাব্দে হিউয়েন সাং যখন বাংলা ভ্রমণে আসেন তখন এই দেশ পাঁচটি প্রদেশে বিভক্ত – কজঙ্গল, পুন্ড্রবর্ধন, কর্ণসুবর্ণ, তাম্রলিপ্তি ও সমতট। কজঙ্গল বর্তমান রাজমহল এলাকা, পুন্ড্রবর্ধন সমগ্র উত্তরবঙ্গ জুড়ে রাজমহল গঙ্গাতীর থেকে করতোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত, কর্ণসুবর্ণ বর্তমান বহরমপুরের দক্ষিণে রাঙ্গামাটি অঞ্চলে, তাম্রলিপ্তি বর্তমান তমলুক অঞ্চলে ও সমতট ছিল বর্তমান যশোর ফরিদপুর ঢাকা থেকে সমতল ত্রিপুরা পর্যন্ত বিস্তৃত।   পাঁচটি জনপদের রাজা বা রাষ্ট্র সম্বন্ধে হিউয়েন সাং কিছুই উল্লখ করেন নি। এই পাঁচটির মধ্যে সমতট বাদে বাকি চারটি নি:সন্দেহে শশাঙ্কের রাজ্যভুক্ত ছিল। শশাঙ্কের মৃত্যুর পর প্রতিটি জনপদই স্বাধীন হয়ে ওঠে। ৬৪২ খ্রীষ্টাব্দে কজঙ্গলে কনৌজ বা কান্যকুব্জের রাজা হর্ষবর্ধন  ও কামরূপের রাজা ভাস্করবর্মার সাক্ষাত হয়। এই সাক্ষাৎকারের পূর্বে ভাস্করবর্মা কোনোও এক সময় পুন্ড্রবর্ধন ও কর্ণসুবর্ণ জয় করেছিলেন ও কর্ণসুবর্ণের জয়স্কন্ধাবার থেকে ভূমিদানপাট্টা বার করেছিলেন। কজঙ্গলে হর্ষের সাথে সাক্ষাতের নিমিত্তে তিনি কুড়ি হাজার রণহস্তি ও ত্রিশ হাজার রণপোতের এক বিশাল বাহিনী নিয়ে উপস্থিত হন। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে শশাঙ্ককের মৃত্যুর পর কর্ণসুবর্ণ ও পুন্ড্রবর্ধনের উপর ভাস্করবর্মার নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তার হয়েছিল। হিউয়েন সাং এর বিবরণ থেকে এটাই মনে হয় যে ৬৪২-৬৪৩ খ্রীষ্টাব্দ নাগাদ কঙ্গোদ (যা একসময় শশাঙ্কের অধীনে ছিল) ও কজঙ্গল হর্ষ কর্তৃক  বিজিত হয়।

ভাস্করবর্মা বোধহয় বেশিদিন কর্ণসুবর্ণ নিজের করায়ত্ত রাখতে পারেন নি। শশাঙ্কের গৌড়তন্ত্র বিনাশ হবার স্বলপ্কাল পরেই গৌড়ে জয় নামক কোনো নাগবংশীয় রাজা রাজত্ব করেছিলেন মঞ্জুশ্রীমূলকল্পে এইরকম একটি ইঙ্গিত আছে। আনুমানিক সপ্তম শতকের মাঝামাঝি মহারাজাধিরাজ জয়নাগ নামে এক রাজা কর্ণসুবর্ণের জয়স্কন্ধাবার থেকে ভূমিদানের আদেশ মঞ্জুর করেছিলেন। জয় নামে এক রাজার নামাঙ্কিত কয়েকটি মুদ্রাও বর্তমান বীরভূম মুর্শিদাবাদ অঞ্চলে পাওয়া গেছে। মুদ্রার জয়, মঞ্জুশ্রীমূলকল্পের জয় ও বপ্যঘোষবাট-পট্টোলীতে জয়নাগ একই ব্যক্তি বলে ধরা হয়। মঞ্জুশ্রীমূলকল্পে বিবরণ থেকে মনে হয় যে শশাঙ্কপুত্র মানব ভাস্করবর্মার থেকে সাময়িক ভাবে কর্ণসুবর্ণ অধিকার করেন। পরে তা জয়নাগের করায়ত্ত হয় ও তিনি মহারাজাধিরাজ আখ্যায় স্বতন্ত্র নরপতি রূপে পরিচিত হন। অথবা এও হতে পারে ভাস্করবর্মা কর্ণসুবর্ণ অধিকারের পূর্বেই জয়নাগ কিছুদিন এই রাজ্য ভোগ করেছিলেন। যাই হোক ৬৫০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যেই শশাঙ্কের গৌড়তন্ত্র পুরো তছনছ হয়ে যায়।

এই অরাজকতার মধ্যেই গৌড় বারংবার বহির্শত্রুর আক্রমণে জর্জরিত হতে থাকে। হর্ষের মৃত্যুর পর আনুমানিক ৬৪৭-৬৪৮ খ্রীষ্টাব্দ নাগাদ তিব্বতের রাজা স্রং ৎসান গাম্পো ভারত আক্রমণ করেন ও ভাস্করবর্মার বংশধরদের সিংহাসনচ্যূত করে কামরূপ বা আসাম দখল করেন ও পরে গৌড় সহ অর্ধেক ভারতে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন। অবশ্য এই তিব্বতি অভিযান সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় না। যাই হোক এই তিব্বতি অধিকার বেশীদিন কায়েম ছিল না। ৭০২ খ্রীষ্টাব্দ নাগাদ তিব্বতি রাজা তার দখল হারান। পরবর্তী আক্রমণ করেন কনৌজরাজ যশোবর্মণ বা যশোবর্মা। ৭২৫ থেকে ৭৩৫ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে কোনসময় তিনি মগধ বিজয় করেন। তিনি প্রথমে মগধরাজকে বিন্ধ্যপর্বতে পালাতে বাধ্য করেন ও পরে সম্মুখ যুদ্ধে তাকে নিহত করেন। পরে তিনি গৌড়রাজকেও পরাজিত ও নিহত করেন। বাকপতিরাজ নামে  সভাকবি যশোবর্মণের গৌড় ও মগধ বিজয় নিয়ে গৌড়বহো নামে একটি কাব্য রচনা করেন। তা থেকে অনুমিত হয় যে সেসময় গৌড় ও মগধের রাজা একই ব্যক্তি ছিলেন কিন্তু তিনি কে ছিলেন তার কোনো সুস্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায় না। মগধ ও গৌড় বিজয়ের পর যশোবর্মণ সমুদ্রতীরের দিকে অগ্রসর হন ও বঙ্গ জয় করেন। কিন্তু তিনি তার এই দিগ্বিজয় বেশীদিন ভোগ করতে পারেন নি। ৭৩৬ সালে গৌড় আক্রমণ করেন কাশ্মীররাজ ললিতাদিত্য মুক্তাপীড়। তিনি যশোবর্মণকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে তার অধিকৃত অঞ্চলে নিজ আধিপত্য বিস্তার করেন। এবিষয়ে প্রামাণ্য বিবরণ  কল্হন বিরচিত রাজতরঙ্গিনীতে আছে। রাজতরঙ্গিনীতে গৌড়ের দুবার উল্লেখ আছে। প্রথম গৌড়মন্ডল থেকে হাতীর দলের ললিতাদিত্যের অভিযানে যোগদান। দ্বিতীয় কাশ্মীরের রাজসভায়  ললিতাদিত্যের আদেশে গৌড়াধিপতির  আগমন।  গৌড়রাজ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। ললিতাদিত্য তার স্বহস্তে নির্মিত পরিহাসপুর (বর্তমান পরসপোর) নগরে প্রতিষ্ঠিত পরিহাসকেশব নামক দেবতাকে মধ্যস্থ রেখে প্রতিজ্ঞা করেন যে তিনি তার অতিথির কোনো ক্ষতি করবেন না। কিন্তু ললিতাদিত্য ত্রিগামী নামে একটি স্থানে অতিথি হত্যা করে নিজ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন। একদল গৌড়বাসী এই বিশ্বাসঘাতকতার বদলা নিতে তীর্থযাত্রীর ছদ্মবেশে কাশ্মীর যাত্রা করেন (এটি আধুনিক পরিভাষায় বলে সুইসাইড মিশন)। তারা ললিতাদিত্যের অনুপস্থিতিকালে পরিহাসকেশব মন্দির অবরোধ করেন। যতক্ষণ না কাশ্মীররাজের সেনাবাহিনী এসে তাদেরকে পরাজিত করে হত্যা না করে ততক্ষণ তারা রূপার তৈরী রামস্বামীর মূর্তিকে পরিহাসকেশব মনে করে চূর্ণ করে।

বৌদ্ধধর্মের ঐতিহাসিক তারনাথের বর্ণনায় পাওয়া যায় বঙ্গরাষ্ট্রে চন্দ্রবংশীয় রাজাগণ খ্রীষ্টিয় অষ্টম শতকের প্রথম পাদ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। এই বংশের শেষ রাজা ছিলেন ললিতচন্দ্র। খুব সম্ভবত এই ললিতচন্দ্রই যশোবর্মণ কর্তৃক বিজিত হয়েছিলেন। তারনাথের বিবৃতি মতে ললিতচন্দ্রের মৃত্যুর পর বাঙলাদেশে অভূতপূর্ব নৈরাজ্যর সৃষ্টি হয়। গৌড় বঙ্গ সমতটে তখন আর কোনো রাজার আধিপত্যে নেই  সর্বময় রাষ্ট্রীয় প্রভুত্ব তো নেইই। রাষ্ট্র ছিন্ন বিচ্ছিন্ন, ক্ষত্রিয়, বণিক, ব্রাহ্মণ সবাই স্ব স্ব গৃহে রাজা, আজ একজন রাজা হচ্ছেন রাষ্ট্রীয় প্রভুত্ব দাবী করছেন তো কাল তার মাথা ধুলায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। এর চেয়ে নৈরাজ্যর বাস্তব চিত্র আর কীহতে পারে। প্রায় সমসাময়িক লিপি (যেমন খালিমপুর লিপি) বা কাব্যে (যেমন রামচরিত) এই ধরণের নৈরাজ্যক বলা হয়েছে মাৎস্যন্যায়। মঞ্জুশ্রীমূলকল্পের গ্রন্থকার শশাঙ্কের মৃত্যুর পর থেকেই গৌড়তন্ত্রে পক্ষাঘাতের কথা লিখেছেন, শশাঙ্কের পর যারা রাজা হয়েছিলেন তারা কেউই পুরো এক বছর রাজত্ব করতে পারেননি। শিশু নামের এক রাজার রাজত্বকালে নারীর প্রতাপ ও প্রভাব দুর্জয় হয়ে উঠেছিল, হতভাগ্য রাজা একপক্ষকাল রাজত্ব করার পর নিহত হন। এই পর্বেই আবার পূর্বপ্রত্যন্ত দেশে নিদারুণ দুর্ভিক্ষ হয়। সব মিলিয়ে এটাই প্রতিভাত হয় যে  অষ্টম শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত বঙ্গদেশ বারংবার এক নিদারুণ বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে দেশের লোকেরা ক্রমাগত অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলতায় বিরক্ত হয়ে আনুমানিক ৭৫০ খ্রীষ্টাব্দ নাগাদ গোপালদেবকে গৌড়ের রাজা নির্বাচিত করেন। এটা যে একটা গণতান্ত্রিক নির্বাচন ছিল বা শক্তিশালী সামন্তরা নিজেদের মধ্য থেকেই একজনকে রাজা নির্বাচন করেছিলেন  তা সুস্পষ্টরূপে বলা না গেলেও সেই সময়ের সমাজ যে একজন রাজা নির্বাচন করেছিল তা “সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট” মতবাদের জ্বলন্ত উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা যায়।

 
তথ্যসূত্রঃ
বাঙ্গালার ইতিহাস অখন্ড সংস্করণ – রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঙ্গালীর ইতিহাস আদি পর্ব – নীহাররঞ্জন রায়
The History of Bengal Vol I – Edited by Dr Ramesh Chandra Majumdar
বঙ্গভূমি ও বাঙালির ইতিহাস – ড: নীতিশ সেনগুপ্ত 
লেখক পরিচিতি
শৈবাল বসু

নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে পদার্থ বিদ্যা নিয়ে স্নাতক। পেশাগত ভাবে গত ৩৪ বছর ধরে ব্যাঙ্কার। নেশাগত ভাবে শরদিন্দু ও ইতিহাস প্রেমী। বর্তমানে কলকাতা ও বাংলার ইতিহাস নিয়ে চর্চারত।

Author

Du-কলম

Join the Conversation

  1. অত্যন্ত তথ্যসমৃদ্ধ লেখা। খুব ভালো লাগলো। এমন লেখা আরোও চাই।

Leave a Reply to SRIJIT MITRA Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!