Home ভ্রমণ, প্রবন্ধ আমার ভ্রমণ বৃত্তান্ত – ৩৯
ভ্রমণপ্রবন্ধ

আমার ভ্রমণ বৃত্তান্ত – ৩৯

গোপা মিত্র

ভূটান
 
পর্ব-১

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেখেছিলেন শিলং পাহাড়ের কোলে- আমি অবশ্য সেখানে তাদের দেখা পাই নি। পাহাড় ভালবেসে বারেবারে ছুটে গেছি পাহাড়ে, আর আমার চোখ খুঁজে ফিরেছে তাদের, পাহাড়ের আনাচে কানাচে। তবুও তাদের দেখা মেলেনি। অবশেষে হতাশ আমি, কখন যেন তাদের খোঁজা ছেড়ে দিয়ে তাদের ভুলেই গিয়েছি। আজ এত বছর পরে প্যাকেজ ট্যুরে বেড়াতে এসে হঠাৎ চমকে উঠলাম, আমাদের চারিপাশে তাদের দেখে। পথিপার্শ্বে, পাহাড়ের আনাচে কানাচে, অতল খাদের গভীর অরণ্যে, তারা তাদের রূপের পসরা সাজিয়ে যেন আমাদের জন্যই অপেক্ষারত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’র ভাষায়, 

“প্রভাতবেলায় হেলাভরে করে
অরুণ মেঘেরে তুচ্ছ
উদ্ধত যত শাখার শিখরে 
রডোডেন্‌ড্রন্‌ গুচ্ছ।’’

কারো কাছে “রডোডেন্‌ড্রন্‌”, আবার কারো কাছে “গুরাস”। এই সকালে চলন্ত মিডি বাস থেকে, লাল সাদা গোলাপী, তাদের দেখলাম বটে, তবে তাদের স্পর্শসুখ অনুভব করা আর হল না। পরে অবশ্য তাদের পেয়েছিলাম হাতে, আর তখনই বুঝেছিলাম যতটা মোহময় তারা দেখতে, ততটা সুগন্ধি তারা নয়। একটি বৃতি থেকে একাধিক পুষ্প জেগে উঠে, মিলে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অপূর্ব এই রডোডেন্‌ড্রন্‌।

হ্যাঁ, আমাদের এবারের গন্তব্য সেই এক চিলতে স্বর্গে, যেখানে সবুজ অরণ্য পাহাড় উপত্যকার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে নীল জলধারা আপন ছন্দে, রডোডেন্‌ড্রন্‌ ম্যাগনোলিয়া পপিরা বসিয়েছে তাদের আপন রঙীন মজলিস্‌ আর বরফের মুকুট মাথায় হিমালয় পর্বতমালা যেথায় অতন্দ্র প্রহরী আর যার চারিপাশ বেষ্টিত তিব্বত, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্স ও অসম দ্বারা, সেই ছোট্ট রাজ্য ভূটানে।  

২০১৩ সালের মার্চ মাসের এক সকালে কলকাতার সেই পুরোন নামী পর্যটন সংস্থার সঙ্গে আমি আর কল্যাণ, ডুয়ার্সের অপূর্ব নিসর্গ দেখতে দেখতে, এসে নামলাম উত্তরবঙ্গের হাসিমারা ষ্টেশনে। হাসিমারা থেকে ভূটান সীমান্তের জয়গাঁও শহর মাত্র ১৮ কিমি। ষ্টেশন থেকে দুধারের চা বাগান আর ছোট ছোট বসতির মধ্যে দিয়ে সংকীর্ণ পথ ধরে গাড়ীতে করে রওনা হলাম জয়গাঁও। দূর থেকেই দেখতে পেলাম ধোঁয়াটে প্রাচীর তুলে দাঁড়িয়ে আছে ভূটান পাহাড়।

কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম নোংরা ঘিঞ্জি ভীড়ে ভারাক্রান্ত সীমান্ত শহর জয়গাঁও। আজ এখানের হোটেলেই আমাদের রাত্রিবাস। হোটেলের উল্টোদিকেই ভূটানের সুদৃশ্য বিশাল প্রবেশতোরণ ভূটানগেট পার হলেই ফুন্টশোলিং। তবে আজ নয় কাল আমরা প্রবেশ করব ভূটানে। 

ভারত চীনের স্থলবেষ্টনীর মধ্যে হিমালয়ের বুকে, স্বাধীন পাহাড়ী রাষ্ট্র ভূটানে আজও চালু রয়েছে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। তান্ত্রিক মহাযানপন্থী বৌদ্ধধর্মের দেশ ভূটানের মানুষ এই দেশকে বলে ড্রুক ইয়ুল অর্থাৎ ড্রাগনের দেশ, নিজেদের বলে ড্রুকপা, আর রাজাকে বলে ড্রুকগিয়্যাল। ভূটানীরা বিশ্বাস করে ড্রাগন ভগবানের রূপ এবং তার বজ্রশক্তি শত্রুদের বিনাশ করে তাদের রক্ষা করবে।

ভূটান প্রবেশদ্বারের পরেই চারিপাশ পাহাড়ে ঘেরা ৪০০মি উচ্চতার ফুন্টশোলিং, সৌন্দর্য আর পরিচ্ছন্নতায় চোখ ধাঁধিয়ে দিল। শহরের নিচ দিয়ে বয়ে চলেছে আমে চু অর্থাৎ তোর্সা নদী। অদূরেই বাসষ্ট্যান্ড ঘিরে হোটেল বাজার দোকানপাট ইত্যাদি। ফুন্টশোলিং পৌঁছেই আমাদের ঘড়ির কাঁটা আধঘন্টা এগিয়ে দিতে হল। আরো একটা কথা, ভূটানে আমাদের সিম কাজ করবে না। তাই এখানে এলে মোবাইলের সিম বদলে নিতে হবে। এব্যাপারে এখানের গাড়ীর ড্রাইভার বা হোটেল কর্মচারীরাই ব্যবস্থা করে দেবে, নচেৎ এদের ফোন থেকেই ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে, তবে কিছু অর্থের বিনিময়ে।  

আমাদের প্রথম গন্তব্য পারো উপত্যকা, ফুন্টশোলিং থেকে প্রায় ১৪৩ কিমি, সময় লাগে প্রায় চার সাড়ে চার ঘন্টা। প্রথম চেকপোষ্টে ছাড়পত্র পেতেই আমাদের মিডি বাস ঘুরে ঘুরে উপরে উঠতে শুরু করল সুন্দর মসৃণ পথ ধরে, নিচে পড়ে রইল আমে চু আর ফুন্টশোলিং। থিম্পু চু আর পারো চুর সঙ্গম, অনিন্দ্যসুন্দর প্রকৃতি সমৃদ্ধ চুজমের আগে আবার একবার অনুমতিপত্র পরীক্ষার পর আমাদের এগিয়ে যাওয়া পারো চুর পথ ধরে। এই দুই নদী – থিম্পু চু আর পারো চু মিলেই সমতলে জন্ম দিয়েছে রায়ডাক নদীর।

মেঘ কুয়াশায় মোড়া প্রকৃতির মধ্যে দিয়ে ধীরে সাবধানে, এগিয়ে চলে আমাদের বাস। দুপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুঁজে ফেরে আমাদের চোখ। কিন্তু হায়! প্রায়ান্ধকার প্রকৃতি আমাদের চোখ শুধুমাত্র পরিশ্রান্ত করে তোলে- ধরা দেয় না কিছুই। কাচের মধ্যে দিয়ে শুধুমাত্র চোখে পড়ে এগিয়ে চলা নির্জন সর্পিল পথ। 

ইতিমধ্যে শুরু হওয়া ঝিরিঝিরি বৃষ্টি বাসের কাচের জানলা ঢেকে দিয়েছে এক অস্বচ্ছ আবরণে; বাইরে দেখার সব চেষ্টাই তখন বৃথা। হঠাৎই থেমে যায় বাস – নেমে দেখি সামনেই এক চওড়া প্রবেশতোরণ, উল্টোদিকে তার অযত্নে অবহেলায় ফুটে থাকা গুচ্ছ গুচ্ছ হলুদবরণ ফুলগুলো হাওয়ার ঝাপটায় আর বৃষ্টির ছোঁওয়ায় কেঁপে কেঁপে উঠছে। কন্‌কনে ঠান্ডায় ঝরে পড়া টুপ্‌টাপ জলকণার মধ্যে দিয়ে সামনের এক চত্বর পার হয়ে আমরা এসে উপস্থিত হলাম ‘সিলভার পাইন’ (Silver Pine) হোটেলের একেবারে সামনে। তার দরজার উপর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়া হাল্কা বেগুনী (Mauve) ফুলের গুচ্ছগুলি যেন আমাদের অভ্যর্থনা জানিয়ে অন্দরে প্রবেশের অনুমতি দিল।

প্রায়ান্ধকার ঘনায়মান বিকেলে অচেনা অজানা জায়গায় টিপ্‌টিপ্‌ বৃষ্টির মধ্যে আজ আর বেরোবার কোন প্রশ্নই নেই। আমরা যে যার ঘর থেকে হাতমুখ ধুয়ে গরম জামা চাপিয়ে এসে, জমা হলাম হোটেলের ড্রইং কাম ডাইনিং হলে। বিকেলের চা আর জলযোগের সঙ্গে আজ সেখানেই জমে উঠল আমাদের নাচ গান আবৃত্তি গল্পর আসর।

পরদিন ভোরে ঘুম ভাঙলো পাখীর কলতানে। ঘর সংলগ্ন বারান্দায় এসে দেখলাম চারিদিকে ছড়ানো ছিটানো শুধুমাত্র ছোটবড় কিছু বাড়ী। হোটেল যথেষ্ট ভালো হলেও পারো এখান থেকে অচেনাই রয়ে গেল। 

সকালের জলখাবার সেরে আমরা বার হলাম পারো সুন্দরীর রূপের সন্ধানে। দূরের নীলচে ধূসর পাহাড়, মেঘমুক্ত স্বচ্ছ আকাশ, ছিমছাম নির্জন ঝক্‌ঝকে রাস্তা পিছনে ফেলে ছুটে চললাম ‘কিচু লাকাং’ মনাস্ট্রী দেখতে। লাকাং বলতে এরা বোঝায় গুম্ফা বা মনাস্ট্রী। ধাপ কাটা সবুজ পাহাড়, মাঝে মাঝেই তার ভাঁজে ভাঁজে উঁকি মারা বসতি, এলিয়ে পড়া রোদ্দুর আর ছায়ায় আঁকিবুকি আলপনা, যেন বিছানো এক নক্‌শী কাঁথা- দারুণ সুন্দর। শহরের চাকচিক্যের সঙ্গে গ্রাম্য সৌন্দর্যের মিশেলে পারোর নিসর্গ এক কথায় অপূর্ব।

সদলবলে প্রবেশ করলাম মনাস্ট্রীর অন্দরে। খুব যে বিশাল তা অবশ্য নয়। গুম্ফার মূলকক্ষের প্রবেশদ্বারের সামনেই দেখলাম পাশাপাশি রয়েছে দু’খানা কমলালেবু গাছ বড়বড় পাকা ফলে ঠাসা – শুনলাম গুরু আশীর্বাদ ধন্য, এই‌ গাছ সারা বছরই থাকে এমন ফলন্ত। মূল কক্ষে গুরু পদ্মসম্ভবার সোনালী মুর্তি। প্রায়ান্ধকার কক্ষে মাখন প্রদীপের আলোয় আর বিশেষ কিছু চোখে পড়ল না। বাইরে বেরিয়ে দেখলাম পুরো মনাস্ট্রীর গায়েই প্রাচীনত্বের ছাপ। তারই মধ্যে কোথাও কোথাও সাদা রঙ্এর প্রলেপ ছিঁড়ে উঁকি দিচ্ছে পুরনো ইঁটের কঙ্কাল। আশেপাশের দেয়ালগুলোয় প্রাচীন গাছের শিকড়বাকড় নতুন করে নক্‌শা এঁকেছে। এসবের মাঝেই চোখ চলে গেল নজর কাড়া বেগুনী ফুলের গাছ দুটোতে। এমন আশ্চর্য সুন্দর বেগুনী ফুল তো আমি আগে দেখিনি। এদের রূপের বাহার যেন সেই প্রাচীন মনাস্ট্রীকেও অনবদ্য করে তুলেছে। একই ফুলের সাদা সংস্করনও রয়েছে, তবে তা চোখ টানে না। পরে জেনেছিলাম, এগুলি লিলি ফুল। সারা ভূটানে অনেক প্রজাতির ফুল দেখলেও এমনটি আর কোথাও দেখলাম না। 

‘কিচু’ থেকে আমরা বাস পথে এসে পৌঁছলাম বাঘের ডেরা বা ‘তাকসাং মনাস্ট্রী’র সামনে। একটা সমতল জায়গায় বাস থামিয়ে উল্টোদিকে দূরের এক পাহাড় চূড়া অঙ্গুলি নির্দেশ করে আমাদের দেখিয়ে দেওয়া হল ‘তাকসাং মনাস্ট্রী’ বা টাইগার নেষ্ট। দেখলাম, বহূদূরের পাহাড় চূড়ায় ঘন সবুজে মুখ লুকিয়ে থাকা এক রহস্য কোটর। ওখানে পৌঁছনোর পথ একটাই, তাও আবার ট্রেকরুট। কম করে প্রায় চার ঘন্টা দুর্গম চড়াই পথে হেঁটে ওখানে পৌঁছতে হবে। প্রথম গুরু পদ্মসম্ভব বাঘের পিঠে সওয়ার হয়ে তিব্বত থেকে এসে এই পাহাড়েই আশ্রয় নিয়েছিলেন। প্রত্যেক ভূটানবাসী সারাজীবনে অন্ততঃ একবার এই মনাস্ট্রীতে আসা অবশ্যকর্তব্য বলে মনে করেন। আমাদের সময় অল্প, কলজের জোরও কম। তাই আমরা কেউই আর সেখানে যাবার চেষ্টা করলাম না। 

আবার এগিয়ে চলা পারো চুর পথ ধরে । আশেপাশের পাহাড়গুলো কখনো উঠছে কখনো নামছে আবার কখনো হারিয়ে গিয়ে খাদ হয়ে যাচ্ছে। সামনেই পারো এয়ারপোর্ট। একপাশের দিগন্তখোলা দুনিয়াটা হঠাৎই যেন পাহাড়ে চাপা পড়ে গেল, অন্যপাশে তখন দারুণ সিনিক বিউটি। বাস থেমে গেল। রাস্তা ঢালু হয়ে যেখানে নেমেছে সেখানে ঝিরঝিরে পাতার শোভা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে গোটাকতক পাইন গাছ। আর একদম নিচ দিয়ে  পারো উপত্যকার বুক চিরে নুড়ি পাথরে নূপুরের নিক্কন তুলে পারো চুর একলা পথ চলা – এয়ারপোর্টের সামনেটাকে সে যেন বেড় দিয়ে আগলে রেখেছে। এরপরেই সরু একটা বাঁধানো চক্‌চকে রাস্তা, টুক্‌টাক গাড়ী টাড়ী চলে বোধহয়। তারপরেই সাদা শরীরে সবুজ রঙের ঢালে ঢাকা বিমানবন্দর। একটা প্লেন তখন সেখানে অপেক্ষারত, বোধহয় ওড়বার অপেক্ষায়। বিমানবন্দরের সীমানা ঘেঁষেই চলেছে পারো যাওয়ার রাস্তা, রানওয়ের প্রায় পাশেপাশেই। নদী, সড়ক আর রানওয়ের এমন বিরল শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, সৌন্দর্যপিপাসু চোখের কাছে কি যে রমণীয় দৃশ্য ! কিন্তু রূপের মুগ্ধতা আর কতক্ষণই বা স্থায়ী হল ? বাসে উঠে আবার ফিরে যেতে হল ফেলে আসা চেনা পথ ধরে।

পরদিনের গন্তব্য চেলেলা পাস। গাড়ী আবার এয়ারপোর্টের পাশ দিয়ে ঘুমন্ত পারোর অনবদ্য সৌন্দর্য সঙ্গে নিয়ে নির্মেঘ নীল আকাশের নীচে মাউন্ট চোমো লহরির (৭৩০০মি) বরফ গলা জলে পুষ্ট গতিশীল অনিন্দ্য সুন্দর পারো চু বা পা চুর পথ ধরে, স্নিগ্ধ শ্যামল উপত্যকা, বিক্ষিপ্ত কিছু ঘরবাড়ী, বাগিচা ও আরো পিছনে, উত্তরে তার সপারিষদ চোমো লহরিকে সাক্ষী রেখে এগিয়ে চলল চেলেলার দিকে।

কিছুদূর এগোতেই শুরু হল নিরিবিলি নির্জন বনপথ। দূরাগত কোনো পাখীর ডাক ছাড়া আর কোনো শব্দ  নেই। এবার পথের ধারে আবির্ভাব রডোডেন্‌ড্রনের – লাল গোলাপী সাদা। প্রথমে বিক্ষিপ্ত ভাবে, তারপর মনে হল আমরা এখন ওদের রাজ্যেই প্রবেশ করেছি। মাঝেমাঝেই ঘন সন্নিবদ্ধ পাইনের সারি আর রং বেরংএর পুষ্প সমারোহ – কিন্তু রডোডেন্‌ড্রন পিছু ছাড়ছে না, সে চলেছে আমাদেরই সঙ্গে।

চড়াইপথে ঠান্ডার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। সংকীর্ণ সর্পিল পথ ধরে চালক অতি সাবধানে গাড়ী চালাচ্ছে। অবশেষে ভূটানের সর্বোচ্চ মোটর পথ চেলেলার (১৩,০৮৩ ফুট) উপর আমরা পৌঁছে গেলাম। ঝোড়ো হাওয়ায় শীর্ষদেশের অসংখ্য রংচঙে লুংদার (প্রার্থনা পতাকা) পত্‌পত করে উড়ছে। ডানদিকের উঁচু জমিতে রয়েছে এক চোর্তেন। সামনে সগর্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে চোমো লহরি পর্বতশৃঙ্গ (২৩,৯৯৬ ফুট)। ইতিউতি ছড়ানো বরফগুলো একবার ছুঁয়ে দেখলাম। ছুঁচের মত তীব্র ঠান্ডা হাওয়া সোজা দাঁড়াতেই দিচ্ছে না। একদিকে দেখা যাচ্ছে পারো উপত্যকার কিয়দংশ, অপরদিকে বিস্তৃত হা উপত্যকার শেষে তিব্বতীয় মালভূমির ধূসর গিরিশ্রেণী। উচ্চতার আধিক্যের জন্য চেলেলায় আমাদের সামনেই সাদা মেঘের জটলা। তারই ফাঁকে বহু দূরে দেখা যায় মেঘের প্রাচীর ভেদ করে জেগে থাকা তুষারাবৃত শিখরমালা।

ব্যাস্‌, আজ আমাদের গন্তব্য ছিল এই পর্যন্তই। এবার ফিরে চলা। তবে এবার আর পারো নয়, যাত্রা ভূটানের রাজধানী থিম্পুর পথে – সেখানেই আমাদের বাকী ক’দিনের রাত্রিবাস। 

— প্রথম পর্ব সমাপ্ত —
লেখিকা পরিচিতি
 
 
 
গোপা মিত্র

ফিজিক্স অনার্স। একসময়ে কিছুদিন শিক্ষকতা করলেও, প্রকৃতপক্ষে গৃহবধূ – কিন্তু পায়ের তলায় সর্ষে। ভ্রমণের নেশা প্রবল। ভারতের বাইরে কোথাও না গেলেও দেশের মধ্যেই প্রচুর ঘুরেছেন। পাহাড়, সমুদ্র, জঙ্গল, ঐতিহাসিক স্থান – কোনোও কিছুই বাদ নেই। এখনও সুযোগ সুবিধে হলেই বেরিয়ে পড়েন। দু-কলমের জন্যে জীবনে প্রথমবার কলম ধরা।

Author

Du-কলম

Join the Conversation

  1. ভূটান যে খুব ই সুন্দর তা বুঝতে পারলাম তোমার লেখার মাধ্যমে।কি সুন্দর বর্ণনা দিয়েছো ওখানকার ।খুব enjoy করলাম তোমার ভ্রমণের কাহিনী।

    1. তোমাদের ভালো লাগলেই আমার লেখা সার্থক । অনেক ধন্যবাদ ।

    1. অনেক ধন্যবাদ । আমার ভালো লাগাটা তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি মাত্র ।

  2. বেশ লাগলো। 22 বছর আগের স্মৃতি ফিরে পেলাম।

    1. আমার লেখা সার্থক। কারণ সামান্য ক্ষণের জন্যে হলেও আপনাকে পুরনো আনন্দ স্মৃতি গুলো ফিরিয়ে দিতে পেরেছে । অনেক ধন্যবাদ ।

Leave a Reply to Runa Ray Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!